দক্ষিণ কোরিয়া
প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক এমপিদের ‘টেনে বের করার’ আদেশ দেন : সেনাবাহিনীর কমান্ডার

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইয়োলের বিরুদ্ধে মার্শাল ল (সেনাবাহিনীর জরুরি আইন) ঘোষণা করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে এক সেনা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট ইয়ুন মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) মার্শাল ল ঘোষণা করার পর সেনাবাহিনীর কমান্ডারকে সংসদ সদস্যদের ‘টেনে বের করার’ আদেশ দেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
কমান্ডার কোয়াক জং-গুন বলেন, প্রেসিডেন্ট ফোনে তাকে বলেছিলেন, "দরজা ভেঙে ফেলো এবং সেখান থেকে এমপিদের বের করে আনো।" তবে প্রেসিডেন্ট ইয়ুন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ ঘটনা নিয়ে তীব্র রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, যা দক্ষিণ কোরিয়ার সাংবিধানিক কাঠামো ও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের ওপরও প্রশ্ন তুলেছে। প্রেসিডেন্ট ইয়ুনের অফিস থেকে জানানো হয়েছে, তারা এ বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল মন্তব্য করতে পারছেন না।
তবে বিদেশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম সাংবিধানিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
ঘটনাটি তদন্তের মুখে পড়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ইয়ুন এখন রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগের তদন্তে সম্মুখীন হয়েছেন। সংসদ একটি বিশেষ কাউন্সিল নিয়োগ করেছে এবং মার্শাল ল ঘোষণার বিষয়ে তদন্তের জন্য একটি প্রস্তাব পাস করেছে। এই ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহ, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট ইয়ুন, তার সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কিম, সাবেক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী লি সাং-মিন এবং কিছু সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দল পিপিপি (পিপল পাওয়ার পার্টি) প্রেসিডেন্ট ইয়ুনের পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। দলের নেতারা জানিয়েছেন, তারা ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট ইয়ুনের পদত্যাগ এবং এপ্রিল বা মে মাসে নির্বাচনের পরিকল্পনা করছেন। এই সংকটের প্রেক্ষাপটে, কিছু পিপিপি সদস্যও প্রেসিডেন্ট ইয়ুনের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
এ ঘটনার পর, প্রেসিডেন্ট ইয়ুন দ্রুত মার্শাল ল প্রত্যাহার করেন, তবে তা দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই এই ঘটনাকে আন্তর্জাতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখছেন।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে, সংসদে মার্শাল ল প্রত্যাহারের জন্য ভোটদান চলাকালীন কিছু ক্ষমতাসীন দলের সদস্য প্রতিবাদ করেছেন এবং তারা প্রেসিডেন্ট ইয়ুনের পদত্যাগ দাবি করেছেন। পিপিপি দলের তিনজন সদস্যও এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন, যা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে এক বড় ধরনের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এবং এই সংকটের সমাধান খোঁজা হবে আগামী দিনে।