বিএনপির মনোনয়ন পাননি সর্বাধিক রাজনৈতিক মামলার আসামি সোহেল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০৯ এএম
					বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। ছবি: ভোরের কাগজ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ২৩৭টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এসব নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে দলটির অন্যতম ত্যাগী ও মাঠের নেতা হিসেবে পরিচিত যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের নাম সেই তালিকায় নেই। দলের এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিএনপির ভেতরে-বাইরে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় থেকে বিএনপির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন হাবিব উন নবী খান সোহেল। বিভিন্ন সময়ে দলের পক্ষ থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি একাধিকবার কারাবরণ করেছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সোহেলের বিরুদ্ধে বর্তমানে সারাদেশে সাড়ে চার শতাধিক মামলা রয়েছে—যা তাকে বিএনপির “সর্বাধিক রাজনৈতিক মামলার আসামি”র অবস্থানে রেখেছে।
তবে এবার মনোনয়নের তালিকায় তার নাম না থাকায় অনেক নেতা-কর্মী বিস্মিত হয়েছেন। দলীয় তৃণমূলের অনেকেই মনে করছেন, একজন ‘নির্যাতিত ও ত্যাগী’ নেতার মূল্যায়ন না হওয়া বিএনপির জন্য নেতিবাচক বার্তা হতে পারে। বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “সোহেল ভাই আন্দোলনের দিনগুলোতে মাঠে ছিলেন, আমরা সবাই জানি তার ভূমিকার কথা। এমন একজন নেতাকে বাদ দেওয়া অনেকের কাছেই বেদনাদায়ক।”
হাবিব উন নবী খান সোহেল নিজে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সরাসরি কিছু না বললেও তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, তিনি (সোহেল) দলের যেকোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন।
এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর দেখা গেছে হাবিব উন নবী খান সোহেল ছাড়াও এই তালিকায় নেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং বেগম সেলিমা রহমানের নাম।
প্রার্থী তালিকায় নেই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সদ্য মনোনীত যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবীরের নামও। নেই বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আমিনুর রশীদ ইয়াসিনের নাম। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপনও নেই প্রার্থী তালিকায়।
বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনায় ছিলেন একাদশ সংসদের সংরক্ষিত আসনের সাবেক সদস্য রুমিন ফারহানার নাম। তবে মনোনয়ন তালিকায় এবার তার নাম দেখা যায়নি। ঢাকা ১০ আসন থেকে বিগত সময়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম। এই আসনে একবার প্রার্থী হয়েছিলেন আরেক নেতা রবিউল ইসলাম রবি। তাদের দুই জনের নামও নেই ঘোষিত তালিকায়।
মাগুরার একটি আসন থেকে এবার দলীয় মনোনয়নের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিলেন আলোচিত নেতা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। তবে তিনিও বাদ পড়েছেন এই তালিকা থেকে। অন্যদিকে, বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পরিবারের সদস্যদের অনেকেই বাদ পড়েছেন মনোনয়ন তালিকা থেকে। দলটির একটি সূত্র জানিয়েছে, আগে থেকে এক পরিবার থেকে একাধিক প্রার্থী না রাখার সিদ্ধান্ত ছিল দলের।
যে কারণে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের স্ত্রী হাসিনা আহমদ, মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদও বাদ পড়েছেন এই তালিকা থেকে। তবে যেসব আসন থেকে বিএনপির সিনিয়র নেতারা নির্বাচন করতেন, তাদের মৃত্যুজনিত কারণে কয়েকটি আসন থেকে তাদের সন্তান বা স্ত্রীদের এবার দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।
	
																	
																	
																	
																	
																	
																	
																	
																	
																	
																	