×

সারাদেশ

আখাউড়ায় ১৩ লাখ টাকার সুরক্ষাসামগ্রী গেল কোথায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২০, ০১:৫০ পিএম

আখাউড়ায় ১৩ লাখ টাকার সুরক্ষাসামগ্রী গেল কোথায়

ফাইল ছবি

   

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা প্রশাসনের ১৩ লাখ টাকার করোনার সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয় এবং বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। করোনার মতো সংকটময় সময়ে রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি এবং সাংবাদিকরা সামনে থেকে দায়িত্ব পালন করলেও তাদের কেউ কোনো সুরক্ষাসামগ্রী পাননি।

অভিযোগ উঠেছে, কাগজপত্রেই সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণের হিসাব দেখিয়েছেন ইউএনও। গত ৩ মাসে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয়-বাবদ এসব টাকা খরচ দেখিয়েছেন তিনি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ভূইয়াকে ম্যানেজ করে ইউএনও খরচের বিল স্বাক্ষর করিয়ে নেন বলে চেয়ারম্যান নিজেই জানিয়েছেন। তবে ইউএনও তাহমিনা আক্তার রেইনা দাবি করেছেন স্বচ্ছতার সঙ্গে তিনি এ টাকা খরচ করছেন।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিতরণের জন্যে চেয়ারম্যান ও সাধারণ মানুষের মাঝে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। মাস্ক, পিপিই, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ মোট ৩০ প্রকার সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ করার কথা জানান ইউএনও তাহমিনা আক্তার রেইনা। এসব সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয়-বাবদ উপজেলা উন্নয়ন তহবিল থেকে ১২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। এর মধ্যে দেড় লাখ টাকায় ৫ হাজার মাস্ক, ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় ৪ হাজার গ্লাভস, প্রায় ৮০ হাজার টাকায় স্যানিটাইজার ক্রয় করেন। এছাড়া প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ২৬টি বেসিন স্থাপন করেন। তবে সরেজমিন গিয়ে ব্যবহার-উপযোগী ১৫টি বেসিন পাওয়া গেছে। বাকিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার রেইনা সাংবাদিকদের ইস্টিমেটের কপি দেন। ইস্টিমেটে ১৭টি আইটেম উল্লেখ থাকলেও কোন আইটেম কত টাকা মূল্যে কেনা হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি। পরে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসের সার্ভেয়ার মো. জহুরুল ইসলামের মাধ্যমে ৩০ প্রকার সুরক্ষাসামগ্রী ক্রয়ের তালিকা পাঠান। যার সঙ্গে আগে দেয়া ইস্টিমেটের কোনো মিল পাওয়া যায়নি। আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ইউএনও স্যার আমাকে ১০০টি মাস্ক ও ২০ জোড়া গ্লাভস দিয়েছেন। এছাড়া আর অন্য কিছু পাইনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, একই ভবনে থাকা সত্তে¡ও তারা কোনো সুরক্ষাসামগ্রী পাননি।

আখাউড়া উপজেলা এলজিইডির সার্ভেয়ার জহুরুল ইসলাম বলেন, এত টাকার সুরক্ষাসামগ্রী দেয়া হলেও আমি কিছু পাইনি।

আখাউড়ায় করোনা রোগী শনাক্তের আগেই ১৩ মার্চ ইস্টিমেট করা হয়। ওই ইস্টিমেটে ১৫ মার্চ ইউএনও স্বাক্ষর করেন। অথচ দেশে ২৬ মার্চ থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। তখনো আখাউড়ায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। গত ৯ এপ্রিল আখাউড়ায় প্রথম করোনা উপসর্গ ধরা পড়ে। করোনা শনাক্তের আগেই তিনি কীভাবে ইস্টিমেট করেন। আখাউড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। প্রশাসনের কাছ থেকে সাংবাদিকরা কোনো সুরক্ষাসামগ্রী পাননি।

আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মমিন বাবুল বলেন, যুবলীগের পক্ষ থেকে মাস্ক, স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়েছে। ইউএনও যুবলীগকে একটিও মাস্ক স্যানিটাইজার দেননি। পৌর যুবলীগের সভাপতি মনির খান, ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলুসহ একাধিক নেতা বলেন, ইউএনওকে কোথাও এসব সামগ্রী বিতরণ করতে দেখেননি তারা। আমাদেরও তিনি কিছু দেননি। তাহলে ১৩ লাখ টাকার সামগ্রী কোথায়, কাকে দিলেন? আখাউড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাসেম ভ‚ঁইয়া বলেন, আমি বলেছিলাম ৪-৫ লাখ টাকা খরচ করতে। কিন্তু ইউএনও নিজের ইচ্ছেমতো ১৩ লাখ টাকা খরচ করেছেন। বিল-ভাউচার ঠিক না থাকায় প্রথমে তিনি এ টাকা অনুমোদনে স্বাক্ষর করতে রাজি ছিলেন না। পরে বাধ্য হয়ে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানান।

তবে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার রেইনা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাস্ক, পিপিসহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়েছেন। এছাড়া ৭ হাজার ২২২ জনকে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শিশুখাদ্য ও নগদ আর্থিক সহায়তা করেছেন বলে জানান ইউএনও। যার সঠিক হিসাব নেই তার কাছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

এবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু

এবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু

নুসরাত ফারিয়া বিমানবন্দরে আটক

নুসরাত ফারিয়া বিমানবন্দরে আটক

ঝড়-বৃষ্টির মাঝে তাপমাত্রা বৃদ্ধির আভাস

ঝড়-বৃষ্টির মাঝে তাপমাত্রা বৃদ্ধির আভাস

ভারতে ভবনে আগুন, শিশুসহ ১৭ জন নিহত

ভারতে ভবনে আগুন, শিশুসহ ১৭ জন নিহত

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App