দাউদকান্দি ও তিতাসে ২ পুলিশসহ ৩ জন নিহত

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০৬:২০ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুটের পর দাউদকান্দি তিতাস থানা ভবন ও গৌরীপুর ফাঁড়ি এখন পুলিশ শূন্য। শুধু থানা ভবন নয়, গৌরীপুরে সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়, পুলিশ সদস্যদের মেস কার্যত ফাঁকা হয়ে গেছে। আর এ হামলার ঘটনায় ৩পুলিশসহ চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশতাধিক।
নিহতরা তিতাস থানার এসআই রেজাউল ও কনস্টেবল মাইনুদ্দিন, দাউদকান্দি উপজেলার তুজারভাঙ্গা গ্রামের বাবু(১৯)।
সোমবার বেলা ৩টার দিকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ১০/১১টা পর্যন্ত তিতাস ও দাউদকান্দি থানায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় দুর্বৃত্তরা। তারা কমবেশি ওই থানা এবং গৌরীপুর ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে। আর এসব প্রতিষ্ঠানে থাকা চেয়ার টেবিল ভাংচুরসহ টিভি, ল্যাপটপ, বৈদ্যুতিক পাখাসহ মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানান।
সোমবার সন্ধ্যা উত্তেজিত ছাত্র জনতা দাউদকান্দি থানায় হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা এবং আত্মরক্ষায় হামলাকারীদের ওপর রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছোড়েন।এতে বাবু(১৯) নামে এক জন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। নিহত বাবুর দাউদকান্দি সদরের তুজারভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ।
পরে বিক্ষুব্ধ জনতা থানার গেইট ভেঙ্গে ভিতরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় বলে স্থানীয়রা জানান।
আরো পড়ুন: অনুপ্রবেশকালে শিশুসহ ১০ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার
একই অবস্থা তিতাস থানার, পুলিশ নিজেদের রক্ষার জন্য প্রথমে রাবার বুলেট টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পরে গুলি চালায়। এতে এতে আন্দোলনকারী ছাত্র জনতা কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পরলে বিভিন্ন এলাকার ছাত্র জনতা থানার চারপাশ ঘিরে ফেলে। তখন রাত আনুমানিক ১১ দিকে হামলা দুই পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। অন্য পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার জন্য কে কোথায় পালিয়ে গেছে কেউ বলতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ( এফবি নিউজ ২৪) রাসেল মুন্সি বলেন , তিতাস থানায় হামলা হচ্ছে খবর শুনে দ্রুত যাই। সেখানে ছাত্র আন্দোলনকারীদের সাথে সাধারণ লোকজন হামলা চালায়। ছাত্রদের পিছনে থাকা হামলাকারীরা লুটপাটের উদ্দেশ্য এঘটনা ঘটাচ্ছেন, থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। তিনি জানান, হামলাকারীদের ধারণা আওয়ামী লীগের নেতারা থানার ভিতরে রয়েছে, একারণে তারা হামলা করতে জড়ো হয়েছেন।
পরে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে আমার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছি। আজ মঙ্গলবার(৬ আগস্ট) সকালে থানায় গিয়ে চিত্রটি দেখে মুরুব্বিদের কাছ থেকে শোনা ৭১এর কথা মনে পরে গেছে। থানার পিছনে ডোবার মধ্যে দুই পুলিশ সদস্যের লাশ ভেসে আসে। দক্ষিণ পাশের ডোবায় আরেক জন ভেসে আছে। দুপুর পর্যন্ত মোট তিন পুলিশ সদস্যের লাশ ভেসে আছে কেউ দেখার নেই।
তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমাইয়া মমিন বলেন, থানার ওসি আমাদের জানিয়েছেন জনতা সব লুট করে নিয়ে গেছে। এখনও থানায় যাওয়ার পরিস্থিতি নেই। থানায় আগুন দেওয়া হয়েছে। গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। আর দু'জন পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন থানায আমাদের সদস্যের সাথে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। কে কোথায় আছে জানি না। আমাদেরকে একটু সময় দেন।