×

অর্থনীতি

বন্দরের কার্যক্রমে অটোমেশন, লজিস্টিক সুবিধা বৃদ্ধির আহ্বান ঢাকা চেম্বার সভাপতির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১১ পিএম

বন্দরের কার্যক্রমে অটোমেশন, লজিস্টিক সুবিধা বৃদ্ধির আহ্বান ঢাকা চেম্বার সভাপতির

ঢাকা চেম্বার আয়োজিত ‘ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া সহজীকরণ: প্রেক্ষিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

   

আমাদের জিডিপিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ। তবে এ হার আরো উন্নীত করতে হলে, বন্দর এবং শুল্ক কার্যক্রমে অটোমেশন, লজিস্টিক সুবিধা বৃদ্ধি, সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার সমন্বয়হীনতা হ্রাস, ব্যালেন্স অফ পেমেন্টের অবস্থার উন্নয়ন, বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়নো এবং ব্যাংক ঋণের সুদ হার যৌক্তিভাবে হ্রাসকরণ অতীব জরুরী বলে মনে করেন ডিসিসিআই সভাপতি আশরাফ আহমেদ। 

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া সহজীকরণ : প্রেক্ষিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ অভিমত প্রকাশ করেন। 

অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে টাকার মূল্যমান হ্রাস, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্বল্পতা, ব্যাংক ঋণের সুদের উচ্চহার এবং ঋণপত্র খোলার প্রতিবন্ধকতাসহ নানাবিধ সমস্যা আমাদের বেসরকারি খাত মোকাবেলা করছে। এছাড়াও বন্দর সমূহে আমদানি পণ্যের শুল্কায়নে পদ্ধতিগত জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা, নানা ধরনের জরিমানা আরোপের ফলে আমাদের ব্যবসায়িক খরচ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। 

সেই সঙ্গে দেশের বন্দর সমূহের কার্যক্রমে অটোমেশনের অভাব, টেষ্টিং ও স্ক্যানিং সুবিধার অপর্যাপ্ততার কারণেও পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে প্রচুর সময় নষ্ট হচ্ছে, ফলে আমরা ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতায় ক্রমাগত ভাবে পিছিয়ে পড়ছি। তিনি উল্লেখ করেন, ২০২৫ অর্থবছরের জন্য সরকার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৫৭.৫ বিলিয়ন নির্ধারণ করছে, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে রপ্তানি বৃদ্ধিকল্পে আমাদেরকে সব বন্দর সমূহের কার্যক্রমে অটোমেশনের পাশাপাশি সহজীকরণ, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, বন্দর ও কাস্টমস হাউসে নিয়োজিত ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি, বন্দরগুলোর সঙ্গে স্থল, রেল ও জলপথের সংযোগ উন্নীতকরণ, আন্তর্জাতিক লেনদেন প্রক্রিয়া সহজতর করার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির উপর জোরারোপ করেন ডিসিসিআই সভাপতি।   

আরো পড়ুন: সয়াবিন তেল ও পাম তেলের শুল্ক অব্যাহতির প্রস্তাব

উক্ত অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের সদস্য (ফিন্যান্স) এস এম লাভলুর রহমান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম ফজলুর রহমান, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব (পরিচালক, ট্রাফিক) মো. কামাল হোসেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (ডব্লিউটিও অনুবিভাগ) ড. ফারহানা আইরিছ এবং বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসান আলী অংশগ্রহণ করেন। 

সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশের সদস্য এস এম লাভলুর রহমান বলেন, বন্দরের নিয়োজিত সরকারি সংস্থাসমূহের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতার কারণে অনেকক্ষেত্রে পণ্যের আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রিতা পরিলক্ষিত হয়। তিনি বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ডটার্মিনালের কার্যক্রম চালু হলে কার্গো সুবিধা আরো ২-৩গুণ বৃদ্ধি পাবে এবং সেখানে আরো ৩টি কার্গো ভিলেজ স্থাপন করা হবে। বিমানবন্দরগুলো পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সহজতর করার লক্ষ্যে সুনিদিষ্ট সময় ভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে তিনি অভহিত করেন।  

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগদান করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমোডর এম ফজলুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে অনেকক্ষেত্রে বন্দরে কন্টেইনার যটসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার তৈরি হয়, বিষয়টি মোকাবেলায় তিনি অটোমেশন কার্যক্রম বাড়ানোর পাশাপাশি নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের দক্ষতা বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন।   

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব মো. কামাল হোসেন বলেন, মংলা বন্দরে প্রয়োজনীয় অবকাঠমো থাকলেও এ বন্দর ব্যবহারকারী জাহাজের সংখ্যা খুবই কম। তিনি বেসরকারিখাতকে আরো বেশি হারে মংলা বন্দর ব্যবহারের আহ্বান জানান। তিনি উল্লেখ করেন, গতবছর মংলাবন্দর দিয়ে ১ কোটি ৮ লাখ মেট্রিকটন পণ্য এবং ৩২ হাজার কনটেইনার খালাস হয়েছে।   

আরো পড়ুন: ডিমের নতুন দাম নির্ধারণ করে দিলো সরকার

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (ডব্লিউটিও অনুবিভাগ) ড. ফারহানা আইরিছ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থা উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বাড়ানোর উপর জোরারোপ করেন।  

বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাসান আলী বলেন, দেশের ২৪টি স্থলবন্দরের মধ্যে ভারতের সঙ্গে ২৩টি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে ১টি দিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তিনি বলেন, সব স্থলবন্দরে অটোমেশন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে, যা আগামী ২ বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন, যার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন। এছাড়াও স্থলবন্দর সমূহে স্ক্যানিং সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হলে পণ্য আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়া আরো দ্রুততর হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। 

মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআই পরিচাক তাসকিন আহমেদ, রাজীব এইচ চৌধুরী, প্রাক্তন সহ-সভাপতি এম আবু হোরায়রাহ, প্রাক্তন পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান এবং আহ্বায়ক মো. সাইফুর রহমান প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন। 

ডিসিসিআই সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাসহ সরকারি-বেসরকারিখাতের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

এবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু

এবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু

নুসরাত ফারিয়া বিমানবন্দরে আটক

নুসরাত ফারিয়া বিমানবন্দরে আটক

ঝড়-বৃষ্টির মাঝে তাপমাত্রা বৃদ্ধির আভাস

ঝড়-বৃষ্টির মাঝে তাপমাত্রা বৃদ্ধির আভাস

ভারতে ভবনে আগুন, শিশুসহ ১৭ জন নিহত

ভারতে ভবনে আগুন, শিশুসহ ১৭ জন নিহত

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App