সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিলুপ্ত হচ্ছে ‘সহকারী শিক্ষক’ পদ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩১ এএম

‘সহকারী শিক্ষক’ পদ বিলুপ্ত হয়ে নতুন নাম হবে শুধু ‘শিক্ষক’। ছবি : সংগৃহীত
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহুল ব্যবহৃত ‘সহকারী শিক্ষক’ পদটি আর থাকছে না। এখন থেকে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষকদের পদ হবে শুধু ‘শিক্ষক’। প্রশাসনিক কাঠামোকে আরো স্বচ্ছ ও যুগোপযোগী করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শামছুল আরিফ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সমন্বয় সভার সুপারিশের আলোকে এই পদবির পরিবর্তনসহ আরো চারটি পদে নতুন নামকরণ করা হয়েছে।
বদল ৩ লাখ ৬২ হাজার শিক্ষকের পদবী
এই সিদ্ধান্তের ফলে সারাদেশে প্রায় ৩ লাখ ৬২ হাজার ৪১৮টি পদে সরাসরি নাম পরিবর্তন হচ্ছে। এখন থেকে নতুন নিয়োগ, বদলি কিংবা পদোন্নতিতে ‘সহকারী শিক্ষক’ নয়, বরং ‘শিক্ষক’ পদবীই ব্যবহার করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, মাঠপর্যায়ে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের দায়িত্বের সঙ্গে পদবীকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং বিভ্রান্তি দূর করাই এই পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য।
আরো চারটি পদে নতুন নাম
শুধু শিক্ষক পদই নয়, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার আরো চারটি প্রশাসনিক পদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এগুলো হলো—সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এখন থেকে হবে অতিরিক্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, অর্থ কর্মকর্তা হবে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, সহকারী মনিটরিং অফিসার হবে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে সহকারী ইনস্ট্রাক্টর (পরীক্ষণ বিদ্যালয়)। বর্তমানে দেশে ৩৩৫টি পরীক্ষণ বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে এই নতুন নাম প্রযোজ্য হবে।
নাম বদলের যৌক্তিকতা
মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, দীর্ঘদিন ধরেই কিছু পদবীর ক্ষেত্রে ‘সহকারী’ শব্দের ব্যবহারে বিভ্রান্তি তৈরি হতো। বিশেষ করে দায়িত্ব ভাগাভাগি ও মাঠপর্যায়ের কাজে এটি সমস্যা তৈরি করত। নতুন নামকরণ দায়িত্বের স্বচ্ছতা ও মর্যাদা আরো স্পষ্ট করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এটি শুধু নাম পরিবর্তন নয়, প্রশাসনিক সক্ষমতা ও মর্যাদা বৃদ্ধির অংশ। এর ফলে কর্মকর্তাদের ভূমিকা আরো স্পষ্ট হবে এবং ভবিষ্যতে পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়াতেও সুবিধা হবে।
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এ ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তনে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমে সমন্বয় আরো মজবুত হবে।