বুধবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর একটি বিমানবন্দরে উড্ডয়নের সময় ১৯ জন যাত্রী নিয়ে একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনায় ১৮ আরোহী নিহত হলেও বেঁচে গেছেন একমাত্র পাইলট। ককপিটটি উড়োজাহাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন।

পাইলটের নাম ক্যাপ্টেন মনিষ রত্ন শাকায়া। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে তিনি কথা বলতে পারছেন বলে নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের মেডিকেল পরিচালক মেনা থাপা বলেন, পাইলটের মাথা ও মুখে বেশ আঘাত লেগেছে। তার পিঠের হাড় ভেঙে যাওয়ায় দ্রুতই অস্ত্রোপচার করা হবে। বর্তমানে নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

নেপাল পুলিশের জ্যেষ্ঠ সুপারিনটেনডেন্ট দামবার বিশ্বকর্মা বলেন, এয়ার শিল্ড খুলে যাওয়ায় তার (পাইলট) শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তাই তাকে জানালা ভেঙে দ্রুত বের করে আনা হয়। তার মুখমণ্ডল রক্তে মাখা ছিল। ওই অবস্থাতেই আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

নেপালের বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী বাদ্রি পান্ডে জানান, রানওয়ের পূর্ব দিকে বিধ্বস্ত হওয়ার আগে উড়োজাহাজটি বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের সময় আচমকা ডান দিকে মোড় নেয়। উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়ে নিচে পড়ার সময় বিমানবন্দরের প্রান্তে কনটেইনারে ধাক্কা খায়...এরপর এটি আরো নিচে পড়ে যায়। ককপিটটি কনটেইনারের ভেতরে আটকে গিয়েছিল। আর এভাবেই বেঁচে গেছেন পাইলট। উড়োজাহাজের বাকি অংশ নিকটবর্তী ঢিবিতে আছড়ে পড়ে টুকরা টুকরা হয়ে যায় বলেও জানান পান্ডে।

আরো পড়ুন : বাংলাদেশের জন্য উন্নয়ন বরাদ্দ ৪০ শতাংশ কমালো ভারত

নেপাল সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, দুর্ঘটনার পাঁচ মিনিটের মধ্যে পাইলটকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নেয়া হয়। তখন তার জ্ঞান ছিল।

বুধবার সন্ধ্যায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা পাইলটকে দেখতে হাসপাতালে যান। পাশাপাশি এই দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত চলছে।ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের প্রধান নিরাউলা বলেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে উড়োজাহাজটি ভুল দিকে যাচ্ছিল। এটি উড্ডয়ন করতেই ডান দিকে মোড় নেয়, অথচ এটির যাওয়ার কথা ছিল বাঁ দিকে।

উড়োজাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্বল নিরাপত্তাব্যবস্থার জন্য নেপালের ব্যাপক সমালোচনা আছে। ১৯৯২ সালে নেপালে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১৬৭ জন নিহত হন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে দেশটিতে ইয়েতি এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ৭২ জন নিহত হন।