×

আইন-বিচার

শেখ হাসিনাসহ ৯০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩০ পিএম

শেখ হাসিনাসহ ৯০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা

ছবি: সংগৃহীত

   

২০১৩ সালে এক জামায়াত কর্মীকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক কয়েকজন মন্ত্রী, আইনজীবী, পুলিশ কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ মোট ৯০ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন। রবিবার (৬ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা রহমানের আদালতে এ মামলা করেন ভুক্তভোগী জামায়াত কর্মী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া (৫৫)। 

আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে শেরেবাংলা নগর থানাকে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। সোমবার (৬ জানুয়ারি) সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার শিব শংকর এ তথ্য নিশ্চিত করেন। 

মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক এমপি ও মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, হাসানুল হক ইনু, হাসান মাহমুদ, আমীর হোসেন আমু, দিলীপ বড়ুয়া, কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, রাশেদ খান মেনন, শ ম রেজাউল করিম, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, আ ক ম মোজাম্মেল হক। 

আইনজীবীদের মধ্যে আসামি করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের দুদকের সাবেক আইনজীবী এম খুরশিদ আলম খান, এ্যাড. মোশাররফ হোসেন কাজল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. তুরিন আফরোজ, ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের সাবেক চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ রেজাউর রহমান, সাবিনা ইয়াসমিন মুন্নী, রানা দাশ গুপ্ত, মোহা. মোখলেছুর রহমান খান বাদল, জাহিদ ইমাম, তাপস কান্তি বল, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাড. আব্দুল্লাহ আবু, এ্যাড. হেমায়েত উদ্দিনকে। 

আরো পড়ুন: লাইভে এসে শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য মেজর ডালিমের

এছাড়াও সাংবাদিকদের মধ্যে আছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান, একাত্তর টিভির শাকিল আহমেদ, ফারজানা রুপা, মোজাম্মেল হক বাবু, এটিএন নিউজের মুন্নী সাহা, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সুভাষ সিংহ রায় ও একাত্তর টিভির মোজাম্মেল হোসেন বাবু। 

পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, বেনজির আহমেদ, হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবি প্রধান হারুনুর রশিদ, ডিএমপি সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, শেরেবাংলা নগর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. আব্দুল মমীনসহ অনেকে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদী মোহাম্মদ আলমগীর হোসাইন ভূঁইয়া ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে ব্যক্তিগত কাজে মিরপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে ফার্মগেটের তেজগাঁও কলেজের সামনে যান। ওইদিন হরতালের সমর্থনে বিরোধী দল বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করে। এসময় শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলকারী ও পথচারী লোকজনদের উপর নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করেছিল। একপর্যায়ে মিছিলকারীরা ছুটাছুটি শুরু করলে পুলিশ পথচারী ও মিছিলকারীদের হত্যার উদ্দেশ্যে বেধড়ক মারধর করে আটক করেছিল। 

এরপর পুলিশ প্রায় ১১ জন পথাচারীকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। যাদের মধ্যে মামলার বাদী মোহাম্মদ আলমগীর হোসাইন, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ফাহাদ, মাইন উদ্দিন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ছাত্র ইসমাইল, রাফাত, আব্দুস শহীদ ও আব্দুল বাসেতসহ ছয়-সাত জনকে পুলিশ হাত-পা বেঁধে নির্বিচারে গুলি করে। এর মধ্যে বাদী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেইন ভূঁইয়া (৫৫) এবং অপর ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ফাহাদ (৩০) পুলিশের গুলিতে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান। অপরজন মহিন উদ্দিন ওরফে মাঈন উদ্দিন (২২) পুলিশের গুলিতে গুরুত্বর আহত অবস্থায় দীর্ঘদিন চিকিৎসারত ছিলেন।

আরো পড়ুন: অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৪২৬ বাংলাদেশি ও ১৮ ভারতীয় নাগরিক আটক

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তাদের মধ্যে কয়েকজনকে পুলিশ আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেলেও চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে উল্টো বাদী আলমগীরসহ ১১ জন এজাহারনামীয় ও ১৫০-১৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে শেরেবাংলা নগর থানায় নাশকতার পৃথক তিনটি মামলা করে তাকে গ্রেপ্তার দেখায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন বিক্ষোভস্থল থেকে গ্রেপ্তার করে ভুক্তভোগী আলমগীরকে শেরেবাংলা নগর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। সেদিন সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে আসামি শেরেবাংলা নগর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. আব্দুল মমীন বাদী আলমগীরের বাম পায়ে গুলি করে দেয়। এসময় থানার এএসআই আসফাদ্দৌলা, এসআই মছিউর, এসআই কামাল হোসেন, এসআই বজলুর রহমান আলমগীরকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাইফেলের বাট, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে হাতে, কোমরে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাত করে। 

এরপর পুলিশ আলমগীরকে প্রথমে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিউিট ও হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে ২ মার্চ উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান নিটোরে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এরপর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শে ভুক্তভোগী আলমগীরের বাম পা কেটে ফেলা হয়। ফলে তিনি আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করেন। এ ঘটনায় সে সময় দৈনিক আমার দেশ ও দৈনিক নয়াদিগন্তে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর চিরতরে পঙ্গু হয়ে তিনটি মামলায় জেল হাজতে দীর্ঘদিন আটক থাকার পর জামিনে মুক্ত হন বাদী।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

অবৈধ ভারতীয়দের নিয়ম মেনে ফেরত পাঠানো হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবৈধ ভারতীয়দের নিয়ম মেনে ফেরত পাঠানো হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড

শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় হিটু শেখের মৃত্যুদণ্ড

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App