সাংবাদিক পরিচয় পেয়েও পুলিশ গুলি করে: ট্রাইব্যুনালে মোহিদ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পরও পুলিশ গুলি চালিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন সিলেটের আলোকচিত্র সাংবাদিক মোহিদ হোসেন।
সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সিলেটের স্থানীয় দৈনিক একাত্তরের কথা-এর এ কর্মী সাক্ষ্য দেন।
এদিন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মোহিদসহ ছয়জন সাক্ষীকে হাজির করা হয়।
মোহিদ জানান, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই শুক্রবার দেশব্যাপী বিএনপির গায়েবানা জানাজা কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি সংবাদ সংগ্রহে যান। সিলেটের মধুবন পয়েন্টে কালেক্টরেট জামে মসজিদে জানাজার পর শান্তিপূর্ণ মিছিল বের হলে হঠাৎ পেছন থেকে পুলিশ অতর্কিত গুলি চালায়।
তিনি বলেন, আমি এবং সহকর্মী সাংবাদিক আবু তোরাব দায়িত্ব পালন করছিলাম। আমি হাত তুলে পুলিশকে বলি, আমরা সাংবাদিক। তারপরও তারা গুলি চালায়। তোরাব গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে বসে পড়েন। আমি তাকে রিকশায় করে ওসমানী মেডিকেলে নিয়ে যাই। কিন্তু পুলিশ ও সরকারি দলের লোকজন চিকিৎসায় বাধা দেয়ায় ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান।
মোহিদের দাবি, পুলিশের এডিসি সাদিক কাউসার দন্তগীর, কোতোয়ালী থানার এসি মিজানুর রহমান ও ওসি মহিউদ্দিনসহ আরো অনেকে গুলি চালান। তিনি ঘটনাস্থলের দুটি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে জমা দেন। এর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত তোরাব নিজেই রিকশায় ওঠেন এবং মোহিদ রিকশাটি টেনে নিয়ে যাচ্ছেন।
সাক্ষ্যে মোহিদ আরো বলেন, আল জাজিরা ও বিবিসির তথ্যচিত্র দেখে তিনি জানতে পারেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। পরে আরো জানতে পারেন এ ঘটনায় দায়ী ছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের প্রধান ও স্বরাষ্ট্রসচিবসহ অনেকে।
সেদিন সিলেটের আরেক সাংবাদিক হুমায়ুন কবির লিটন একই ধরনের সাক্ষ্য দেন। ঢাকার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ হাসানাৎ আল মতিনও সাক্ষ্য দেন যে, ১৯ জুলাই শামসুল ইসলাম নামের এক গুলিবিদ্ধ রোগীর শরীর থেকে অস্ত্রোপচারে বুলেট বের করা হয়েছিল, তবে পরে তিনি আইসিইউতে মারা যান।
এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৌঁসুলি মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, মোট সাক্ষীর সংখ্যা প্রায় ৪০ জন।