×

সাহিত্য

বাংলাদেশ অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২০, ১১:৪৩ এএম

বাংলাদেশ অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে

নাসির উদ্দীন ইউসুফ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

বাংলাদেশ অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে

নাসির উদ্দীন ইউসুফ

   

বিশেষ সাক্ষাৎকার নাসির উদ্দীন ইউসুফ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

নাসির উদ্দীন ইউসুফ। আমাদের চিরকালের গৌরব। তিনি সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা যিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে স্বাধীন করার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। জীবন বাজি রেখে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে এসেছিলেন আমাদের জন্য অমূল্য উপহার হাতে নিয়ে। আমাদের কাক্সিক্ষত লাল সবুজের এক অমর স্বাধীনতা। তিনি যদি জীবনে আর কিছুই না করতেন, তারপরও তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরভাস্মর হয়ে থাকবেন। কিন্তু তার ব্যক্তিত্বের আছে আরেকটি দিক যেটি শিল্পিত স্বভাবে বর্ণময়। তিনি আমাদের নাট্যজগতের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রদের একজন। নাসির উদ্দীন ইউসুফ নির্দেশিত/পরিচালিত নাটক মানেই মঞ্চসাফল্যে তুঙ্গস্পর্শী। সফল চলচ্চিত্র পরিচালনায়ও। নাটক ও চলচ্চিত্রে অসামান্য সাফল্যের জন্য তিনি অসংখ্যবার পুরস্কৃত হয়েছেন। যিনি আমাদের সবার অহংকার কিন্তু নিজে পুরোপুরি নিরহংকারী স্বভাবের এই মানবিক সংস্কৃতজনের করোনাকাল কেমন কাটছে ভোরের কাগজের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের গ্রাম থিয়েটারের মধ্য দিয়ে সারাদেশের গ্রাম এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম করছি ২৫টা জেলায়। থিয়েটারের যেসব অসচ্ছল কর্মী কর্মহীন হয়ে পড়েছে তাদের সহযোগিতা করেছি। আর বাইরের লোকজনকেও করেছি। এখনো চলছে ভেঙে ভেঙে, আগে নিয়মিত করেছি। এখন তো সরকার করছে এবং বেশ সফলতার সঙ্গেই করছে। আমি গ্রাম এলাকায় ছিলাম তো দেখেছি। শহরে বসে টেলিভিশনে পত্র পত্রিকায় অনেক কিছু বলতে এবং লিখতে পারি। আমি অবাক হয়ে গেছি সরকার এবং পুলিশের তৎপরতা দেখে। ব্যবস্থাপনা বেশ ভালো। গ্রামে থাকতে একটু লেখালেখির চেষ্টা করেছি। সেটা সময় হলে জানাব। ঢাকায় এসে ভার্চুয়ালি একটা নাটকের রিহার্সেল শুরু করেছি। নাটক মঞ্চে হবে। মহড়াটা অনলাইনে চলছে।

করোনার ধাক্কায় আপনার চেনা পৃথিবীটার কতটা বদল ঘটেছে বলে মনে করছেন? জানতে চাইলে এই সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বলেন, আমি ভীষণ হাইপার অ্যাক্টিভ মানুষ। ভীষণ ব্যস্ত থাকি সারাক্ষণ। সারাদিন বাইরে বাইরে থাকি। সেই মানুষটাই ঘরে ঢুকে গেছি। কেবলমাত্র ত্রাণ কার্যক্রম করতে বের হচ্ছি। তাছাড়া বেশিরভাগ সময় আমি বাসায়ই থাকছি। আমার ভিন্ন একটা জীবনযাপন হচ্ছে। এটার জন্য আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম না। চর্চার জায়গা থেকে তো একেবারেই অপ্রস্তুত। আমি দৈনিক ১২ ঘণ্টার বেশি বাসার বাইরে থাকি। সেই আমি এখন ঘরে ঢুকে গেছি। আনিসুজ্জামান স্যার চলে গেলেন

শুনে আমি সোজা তার বাসায় চলে গিয়েছিলাম। যদিও বিষয়টা পছন্দ করেনি অনেকে। কিন্তু আমার কিছুই করার ছিল না। আমার মনে হয়েছিল আমার যাওয়া উচিত। সেখানে স্যারের স্ত্রী এবং তার সন্তানদের কাছে কিছুক্ষণ ছিলাম। আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটা চলে গেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, সমাজ, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এই মানুষটা আমাদের পরামর্শ দিয়েছেন, দিকনির্দেশনা দিয়েছেন অবিরল, অনবরত। এর থেকে কোনোদিন পিছপা হননি কখনো। দুঃসাহসী মানুষ ছিলেন তিনি। শেখ হাসিনার উপরে যেমন বাংলাদেশ নির্ভরশীল রাজনীতির কারণে। রাজনীতি এবং রাজনৈতিক সব কর্মকাণ্ড এবং এই রাজনৈতিক একটা সম্ভাবনার জায়গায় যেমন সবাই খুঁজি শেখ হাসিনার নেতৃত্বের মধ্যে। তেমনি করে সমাজ এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে আনিস স্যারের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। সেই মানুষটাই চলে গেলেন! এখন খুবই খারাপ সময় যাচ্ছে আমার। এক ধরনের চাপ অনুভব করছি। অসহায়ত্ব বোধ করছি। লেখার মধ্যে ঢুকলে ভালোও লাগছে। ঢাকা শহরে বহুদিন আকাশ দেখা হয় না। জানালা দিয়ে আকাশ দেখছি। গ্রামে যে ৩৫ দিন ছিলাম সেখানে আকাশের রূপ দেখেছি। দেড় মাসে সবজির চাষ করে সবজি খেয়েছি, পুকুর থেকে মাছ ধরে খেয়েছি। এ ক’দিনে জীবনটাকে ভিন্নভাবে উপভোগ করেছি। এখন ঢাকায় এসে লেখায় মনোযোগ দিয়েছি। গ্রাম থেকেই লেখাটা শুরু করেছি। এখন চলছে।

এ সময় কি পড়ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তোফায়েল আহমেদের রক্ত ঝরা উনিশশ একাত্তর : অসহযোগ আন্দোলন থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা। হিস্ট্রি অব বেঙ্গল পড়ার চেষ্টা করছি। দুই খণ্ডে লেখা বইটি আগেও পড়েছি। পড়েছি, মাশরুর আরেফীনের আলতুসার। স্বকৃত নোমানের শেষ জাহাজের আদমেরা পড়ছি।

আপনি তো দেখছি ইয়াংদের লেখা পড়ছেন, এটা তো আশার কথা.. হ্যাঁ আমি ইয়াংদের লেখাই বেশি পড়ি। কারণ ওদের কাছেই তো সম্ভাবনা। চট্টগ্রামের বিস্তারের আলম খোরশেদের দারুণ একটা অনুবাদ পড়ছি। বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরের রাজু আলাউদ্দিনের অনুবাদও অসাধারণ। মাঝে মাঝে অনলাইনে বেশ কবিতাও পড়ছি। অনলাইনে সারাক্ষণ ঘোরাঘুরি করি। তবে ফেসবুক খুব ডিস্টার্ব করছে। উল্টা পাল্টা লিখছে। সারাক্ষণ একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করে। নিন্দা এবং মিথ্যাচার এ দুটো ফেসবুকের স্তম্ভ। আপনার কি মনে হয় করোনা পরবর্তী বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? এর উত্তরে বিশিষ্ট এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বাংলাদেশ অবশ্যই ঘুরে দাঁড়াবে। আমাদের খাদ্যের অভাব হবে না। কারণ আমাদের প্রচুর খাদ্য উৎপাদন হয়েছে। আগামীতেও হবে। কৃষকরা বসে থাকবে না। তারা বাঁচার জন্য উৎপাদনে যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

বেসিসে প্রশাসক নিয়োগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা

বেসিসে প্রশাসক নিয়োগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা

৯ মাসেও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল না হওয়ায় উদ্বেগ

৯ মাসেও সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল না হওয়ায় উদ্বেগ

এবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু

এবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু

নুসরাত ফারিয়া বিমানবন্দরে আটক

নুসরাত ফারিয়া বিমানবন্দরে আটক

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App