রেদোয়ান রনির বিরুদ্ধে পেশাগত হয়রানির অভিযোগ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৩৪ পিএম

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির সিইও রেদোয়ান রনি
স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও কনটেন্ট নির্মাতা শৌভ রহমান রনি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব রেদোয়ান রনির বিরুদ্ধে পেশাগত হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং মিডিয়া সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কাজের সুযোগে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এ বিষয়ে সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন তিনি।
স্মারকলিপিতে শৌভ রহমান উল্লেখ করেন, তিনি প্রায় ১৫ বছর ধরে চলচ্চিত্র, চিত্রনাট্য ও অডিওভিজ্যুয়াল মাধ্যমে কাজ করছেন। ২০১১ সালে রেদোয়ান রনির সহকারী হিসেবে কাজ করার সময় থেকেই ব্যক্তিগত বিরাগের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি। বর্তমানে রেদোয়ান রনি প্রথম আলোর ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকায় তার প্রভাব ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে তাকে বঞ্চিত করছেন বলেও অভিযোগ করেন শৌভ।
স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি প্রথম আলো ও চরকির অফিসে পুরনো ভুল বোঝাবুঝি মেটাতে তিনি তার বাবা এবং স্কুলবন্ধু কাজী মাহমুদুল হাসান শুভকে নিয়ে যান। রেদোয়ান রনি নিজেই তাদের আমন্ত্রণ জানালেও অফিসে পৌঁছে আচরণে নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে। প্রায় তিন ঘণ্টা মানসিক চাপে রাখা হয় এবং অশোভন মন্তব্য ও মিথ্যা মামলার ভয় দেখানো হয়। শৌভ রহমানের দাবি, প্রবীণ পিতার উপস্থিতিতেও এ ধরনের রূঢ় আচরণ একটি সুপরিকল্পিত অপমান ও হুমকি।
তিনি অভিযোগ করেন, রেদোয়ান রনি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে নিজেকে মুক্তিযুদ্ধ ও প্রগতির মুখোশে মুড়ে মুজিব কোট পরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, এমনকি ভারতীয় (কলকাতা) মিডিয়া পার্টিতেও ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পূর্ব মুহূর্তে তিনি আচরণে পাল্টে নেন এবং এখন বাস্তবতা হলো- সুযোগসন্ধানী রেদোয়ান রনি নিজের খোলস বদলিয়েছেন। প্রয়োজন অনুযায়ী অবস্থান বদলানো তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
একজন স্বাধীন নির্মাতার পেশাগত জীবনকে প্রভাবশালী ব্যক্তি দ্বারা জিম্মি করে রাখার ঘটনা ব্যক্তিগত বিরোধ নয়, বরং মিডিয়া জগতে ব্যক্তি-ভিত্তিক সিন্ডিকেটের উদাহরণ বলে মনে করেন তিনি।
এ ঘটনায় তিন দফা দাবি জানিয়ে শৌভ রহমান জেলা প্রশাসকের কাছে নিরপেক্ষ তদন্ত, পেশাগত মর্যাদা ও কাজের সুযোগ ফিরিয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ এবং মিডিয়া সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নীতিগত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শৌভ রহমান রনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রবিবার সন্ধ্যায় ভোরের কাগজকে বলেন, ‘চূড়ান্ত আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আগে জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছি। শিগগির এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন ও ফেসবুক লাইভে বিস্তারিত জানাবো।’
এদিকে, নির্মাতা আহমেদ ইশতিয়াক হিমেল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘রেদোয়ান রনি আমলনামা’ শিরোনামে একটি দীর্ঘ পোস্টে রনির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেন, ২০০৯ সালে রনির নাটকের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সময় ১১ মাস বিনা বেতনে কাজ করার পরেও প্রাপ্য অর্থ পাননি। এছাড়া, নিজের নির্মিত একটি নাটক প্রচার ঠেকাতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগও করেন তিনি। হিমেলের দাবি, ঘটনার পর পুলিশের দ্বারস্থ হলেও কোনো প্রতিকার পাননি এবং রনির প্রভাবের কারণে দীর্ঘদিন মিডিয়ায় কাজ করতে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।