হজ মৌসুমে টিকেট জালিয়াতির টার্গেট প্রতারক চক্রের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ মে ২০২২, ০২:৩৭ পিএম

বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ডিবি পুলিশের প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার। ছবি: ভোরের কাগজ
ভুয়া ট্রাভেল এজেন্সি খুলে বিমানের টিকেট বিক্রি ও রিফান্ড করে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে লাপাত্তা হয়ে যেত একটি চক্র। পরে ওই যাত্রী বিমানবন্দরে গিয়ে জানতে পারতো তার টিকেট বাতিল হয়েছে। তখন চোখের পানি ফেলা ছাড়া আর কিছুই করার থাকতো না। এয়ারলাইন্সের টিকেটের নামে অহঃরহ মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতানো এই চক্রটির মূল টার্গেট ছিল সামনের হজ মৌসুম। এ চক্রের মূলহোতা মাহবুবুর রশিদ নামে এক প্রতারককে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বুধবার রাজধানী গ্রিনরোড থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে বিভিন্ন এয়ালাইন্সের ৮১টি টিকেট উদ্ধার করা হয়, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন, দুইটি কম্পিউটার, একটি প্রেস লেখা জিপ গাড়ি, ১২টি বিভিন্ন ব্যাংকের চেক, একটি ডাচ-বাংলা এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
[caption id="attachment_348717" align="aligncenter" width="700"]
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, বিমানের টিকেট আগাম বিক্রি করে নির্দিষ্ট ফি জমা দেয়ার পরে যাত্রীদেরকে ই-টিকেটের পূর্ণ ভ্রমণ বৃত্তান্ত দেয়া হতো। পরে ই-টিকেট বুকিংয়ের টাকা রিফান্ড করে তুলে নেয়া হতো। এমতাবস্থায় ফ্লাইটের দিন যাত্রীরা বিমানবন্দরে গিয়ে টিকেট বাতিল ও পেমেন্টকৃত টাকা রিফান্ড করে তুলে নেয়া হয়েছে মর্মে জানতে পারতেন। পরবর্তীতে যাত্রীরা ঐ ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করলে আবার ৫০ হাজার অথবা এক লাখ টাকা ফি নিয়ে একই রকম টিকেট দেয়। এভাবে একটা পর্যায়ে টিকেট এজেন্সির লোকেরা মোবাইল বন্ধ করে অফিস বদল করে লাপাত্তা হয়ে যেতো। এখন পর্যন্ত চক্রটি বেশ কয়েকটি অফিস বদল করেছে। সর্বশেষ বসুন্ধরায় অফিস ছিল তার। তাকে আটক করার পর ২৭ জন ভুক্তভোগী ডিবি কার্যালয়ে এসে এভাবে প্রতারণার শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছে। মাহবুবের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুরনো আরও তিনটি মামলা পাওয়া গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, প্রতারক মাহবুব এমকিউ ট্রেড অ্যান্ড ট্রাভেল কনসালটেন্সির প্রধান নির্বাহী (সিইও) বলে দাবি করে এমন প্রতারণা করে আসছিলো। তার সহযোগী জাহাঙ্গীর বিভিন্ন ক্লায়েন্ট সংগ্রহ, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ও বিভিন্ন ট্রাভেলিং অ্যান্ড ট্যুর এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে আত্মসাতকৃত টাকা গ্রহণ ও বণ্টনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এ কাজে তাকে আরও সহযোগিতা করতো দুবাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশি নাগরিক সাদ।