এম সাখাওয়াত
কোটা আন্দোলনে সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪৫ পিএম

অন্তর্বর্তী সরকারের পাট ও বস্ত্র উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পাট ও বস্ত্র উপদেষ্টা (সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশে সাম্প্রতিক সময়ে এক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান। মোবাইলফোনে নর্থইস্ট নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে পুলিশ বাহিনীর প্রাণঘাতী অস্ত্রের গুলিতে ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় নিহত এসব মানুষের বেশিরভাগই তরুণ ও শিক্ষার্থী।’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শান্তিতে নোবেলবিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে এ সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্ব পান এম সাখাওয়াত। তবে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) উপদেষ্টাদের দায়িত্ব পুনঃবণ্টন করে তাকে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
দায়িত্ব গ্রহণের পর অসংখ্য পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের শান্ত করতে টানা পাঁচ ঘণ্টা তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হয়েছে। আমি তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম শেখ হাসিনার শাসনামলে কাদের হত্যা করা হয়েছে এবং কার নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড চলেছে। অফিসারদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা অনুশোচনায় ভুগছেন এবং অপরাধবোধের অংশ হিসেবে তাদের কেউ কেউ আমাকে আলিঙ্গনও করেন।
আরো পড়ুন: ছাত্র আন্দোলনের বিষয়ে ওএইচসিএইচআরের প্রতিবেদনে যে তথ্য এলো
নর্থইস্ট নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাখাওয়াত হোসেন আরো বলেন, ‘ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে মরিয়া শেখ হাসিনা মানুষের জীবনের কোনো পরোয়া করতেন না। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও এই হত্যাযজ্ঞ চালানোর নেপথ্য কারিগর ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মতো শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার অনেক সদস্য।’
পুলিশ বাহিনীকে কীভাবে পরিচালনা করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে সাখাওয়াত বলেন, সেটি ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ঠিক করবে। তিনি বলেন, ‘কাজটি কঠিন, তবে বেশ কিছু অফিসারকে এরইমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই কর্মকর্তারা মাদক ব্যবসায় লিপ্ত এবং বদলি-পোস্টিং র্যাকেট চালিয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করত। তদন্ত শেষ হলে তাদের কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের আশপাশে অনেক ষড়যন্ত্রকারী এবং শত্রু লুকিয়ে আছে উল্লেখ করে সদ্য পাট ও বস্ত্র উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়া সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ভারত সরকারের প্রতি আমার বার্তা হলো-আপনারা কি ঢাকায় বন্ধুত্বপূর্ণ না শত্রু সরকার চান? কারণ যে দেশ পরাশক্তি হতে চায়, তাকে বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আমরা কেউ টুকরো টুকরো গ্যাং নই।’