নির্বাচনের চাপ বাড়ছে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
রাষ্ট্র সংস্কারে অগ্রাধিকার দেয়া অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়ছে। বিএনপি শুরুতে সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার কথা বললেও এখন দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ চাইছে। সমমনা কয়েকটি দলও একই দাবি জানাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী সংস্কারে গুরুত্ব দিলেও বিলম্বিত নির্বাচন চায় না। বিশ্লেষকেরা বলছেন, দু-একটি ঘটনায় বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের অবস্থানের বদল হয়েছে। এর একটি রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের উদ্যোগ।
বিএনপি এর বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করেছে। দলটির কোনো কোনো নেতা বলেছেন, এতে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে এবং নির্বাচন বিলম্বিত হবে। তাই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি জনগণের মধ্যেও আশ্বাস তৈরি হবে।
সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এক সাক্ষাৎকারে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার সম্পন্ন করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব এটিকে সেনাপ্রধানের ব্যক্তিগত মত বলে উল্লেখ করেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর তাঁদের আস্থা রয়েছে এবং এই সরকার দ্রুত একটি নির্বাচন আয়োজন করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি বলেন, সরকার সময়ের সদ্ব্যবহার করবে বলে আশা করি। অন্য বিষয়গুলো এড়িয়ে নজর ইলেকশনের দিকে রাখলেই হবে। এটার কোনো বিকল্প নেই।
বুধবার বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা গণফোরাম, গণঅধিকার পরিষদের একাংশ ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্র বলেছে, বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পৃথক এসব বৈঠকে ওই তিন দলের নেতারাও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে একমত হয়েছে। তাঁরা রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে বিএনপির অবস্থানের সঙ্গেও একমত পোষণ করেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, শুধু রাজনৈতিক দলগুলো নয়, জনগণও নির্বাচন চায়। এ অবস্থায় রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলে দলগুলো আশ্বস্ত হবে এবং দেরি হলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।
জামায়াত সংস্কারে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এদিকে বিএনপির সঙ্গে দলটির অবস্থানের কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। জামায়াত যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলছে। তবে বিলম্বিত নির্বাচন চায় না। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, আমরাও নির্বাচন চাই। গত ১৫ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি। সামনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ তৈরি করা জরুরি। আমরা সংস্কারে গুরুত্ব দিচ্ছি, কিন্তু তাই বলে নির্বাচন বিলম্বিত হোক, তা চাই না।
সরকার পতনের পর গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সরকার রাষ্ট্র সংস্কারে বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করেছে। চলতি বছরের মধ্যেই কমিশনগুলোর প্রতিবেদন দেয়ার কথা। এরপর রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে সবার পরামর্শের ভিত্তিতে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।