২৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে যুদ্ধবিমান কিনছে বাংলাদেশ
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর (বিএএফ) আধুনিকায়ন ও জাতীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ সিই মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই ক্রয়, প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক খরচসহ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার ৬০ কোটি টাকা।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, চুক্তিটি ২০২৫-২৬ ও ২০২৬-২৭ অর্থবছরে বাস্তবায়নের আশা করা হচ্ছে। এটি সরাসরি ক্রয় বা সরকার-টু-সরকার (জিটুজি) পদ্ধতিতে চীন সরকারের সঙ্গে সম্পন্ন হতে পারে।
জানা গেছে, যুদ্ধবিমানের মূল্য ২০৩৫-২০৩৬ অর্থবছর পর্যন্ত ১০ বছরের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। প্রতিটি ফাইটার জেটের সম্ভাব্য মূল্য ৬ কোটি ডলার, অর্থাৎ ২০টি বিমানের জন্য ১২০ কোটি ডলার, যা প্রায় ১৪ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা।
এর সঙ্গে যুক্ত হবে প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি, পরিবহন ও অন্যান্য খরচ বাবদ আরো ৮২ কোটি ডলার বা ১০ হাজার ৮৬ কোটি টাকা। এছাড়া বীমা, ভ্যাট, কমিশন ও অবকাঠামোগত খরচসহ মোট ব্যয় দাঁড়াবে প্রায় ২২০ কোটি ডলার বা ২৭ হাজার ৬০ কোটি টাকা।
আরো পড়ুন : দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে, কমেছে কর্মসংস্থান
চুক্তি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি
চলতি বছরের মার্চে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরের সময় যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে আলোচনা হয়। এরপর গত এপ্রিল মাসে বিমানবাহিনীর প্রধানকে সভাপতি করে ১১ সদস্যের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়।
এই কমিটি চীনের সঙ্গে দরকষাকষির মাধ্যমে চুক্তির খসড়া, মূল্য নির্ধারণ, প্রশিক্ষণ, খুচরা যন্ত্রাংশ, সংরক্ষণ ও অর্থ পরিশোধের শর্তাবলি চূড়ান্ত করবে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ জে-১০ সিই
জে-১০ সিই যুদ্ধবিমান হলো চীনের জে-১০সি মডেলের রপ্তানি সংস্করণ, যা বর্তমানে চীনের অন্যতম উন্নত ৪.৫ প্রজন্মের মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফট হিসেবে পরিচিত।
২০২৩ সালে পাকিস্তান এই মডেলের বিমান ব্যবহার করে ভারতের রাফায়েল জেট ধ্বংসের দাবি করার পর এটি আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনায় আসে, যদিও ঘটনাটি স্বাধীনভাবে যাচাই হয়নি।
বিমান বাহিনীর বর্তমান অবস্থা
ওয়ারপাওয়ার বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে বর্তমানে ২১২টি এয়ারক্রাফট রয়েছে, যার মধ্যে ৪৪টি ফাইটার জেট।
এসবের মধ্যে ৩৬টি চীনা এফ–৭, ৮টি মিগ–২৯বি, এবং ইয়াক–১৩০ লাইট অ্যাটাক বিমান অন্তর্ভুক্ত। প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে চীনের কে–৮ প্রশিক্ষণ বিমান, আর পরিবহন সক্ষমতা বাড়াতে আছে সি–১৩০জে সামরিক বিমান।
অন্যদিকে, মিল এমআই–১৭ হেলিকপ্টার ব্যবহৃত হচ্ছে সেনা পরিবহণ ও গানশিপ হিসেবে, যা সেনা ও নৌবাহিনীর মধ্যেও ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন কৌশলগত মিশনে।
