গুনে গুনে ৪২ দিন চুপ থাকেন গ্রামের বাসিন্দারা!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২১, ১২:২৮ পিএম

এই নিয়মটি দেখতে পাবেন হিমাচল প্রদেশের মানালির কুলু জেলার গোশাল গ্রামে। ছবি সংগৃহীত
ভারতের উত্তর অঞ্চলের কিছু এলাকায় এই নিয়ম পালিত হতে দেখা যায়। এই গ্রামের মানুষ গুলো খুবই অদ্ভুত। তারা বছরের ৪২ দিন কথা না বলে থাকেন। অর্থাৎ তারা সেই সময় মৌনব্রত বা নীরবতা পালন করেন। কিন্তু কেন এই নীরবতা?
এই নিয়মটি দেখতে পাবেন হিমাচল প্রদেশের মানালির কুলু জেলার গোশাল গ্রামে। এছাড়াও বুরুয়া শানাগ এবং কুলাং গ্রামেও এই রীতি প্রচলিত রয়েছে। এ সকল এলাকার বাসিন্দাদের ৪২ দিন নীরবতা পালনের বিশ্বাসের সঙ্গে পুরাণের যোগসূত্রতা রয়েছে বলে মনে করা হয়। খবর কলকাতা টুয়েন্টিফোরের।
নীরবতা পালনের দিনগুলোতে মানুষ কেবল চুপ থাকেন তা নয় সোলাং এবং রুয়ার মত এলাকার বাসিন্দারা আবার কৃষিকাজও বন্ধ রাখেন। জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত এই রীতি পালিত হতে দেখা যায়।
মাঘ মাসে মকর সংক্রান্তি চলাকালীন এই রীতি শুরু হয়। অনেকের বিশ্বাস এই মৌনব্রত বা নীরবতা পালন করার মাধ্যমে গভীর ধ্যান করতে করতে ঈশ্বর স্বর্গের কাছে পৌঁছে যান। ঈশ্বরের স্বর্গে যাবার পথে যাতে সমস্যা না হয় তাই তারা এই রীতি পালন করেন। আবার একটি পৌরাণিক মত অনুযায়ী বিপাশা নদীর পাশে ঋষি গৌতম তপস্যায় মগ্ন ছিলেন। তাই তার তপস্যায় যাতে ছেদ না পড়ে সেই জন্যেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এখানে একটি বহু প্রাচীন মন্দির রয়েছে যেটি মকর সংক্রান্তির দিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঋষি গৌতম ছাড়াও বেদব্যাস এবং কাঞ্চন নাগের মূর্তিও দেখা যায় মন্দিরে। ফেব্রুয়ারির ২৫ তারিখের পর মন্দির খোলা হয়। সেই সময় যদি মন্দিরের মেঝেতে কোন ফুল পড়ে থাকে তাহলে গ্রামবাসীরা তাকে শুভ সংকেত বলে মনে করেন। তবে ফুলের জায়গায় যদি কয়লার টুকরো পড়ে থাকে তাহলে গ্রামবাসীরা তাকে কোনো দুর্ঘটনার আভাস বলে ধরে নেন।
যদিও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা হয় এই জায়গাগুলি সেই সময় বরফে ঢেকে যায়। তাই এরপর রোদ্দুর খেললে মন্দির খোলা হয়। সেসব জায়গায় এতটাই বরফ জমে যে শীতকালে মানুষ কোন কাজই করতে পারেন না। বেশিরভাগ সময়টাই তাদের ক্লান্তি অনুভূত হয়। তাই তারা কোনো কথা বলা বা বাড়ির বাইরে বেরোনোর কথা ভাবেন না।