বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ইকোসিস্টেম মার্কেটপ্লেস অ্যাপ নিয়ে এলো কার্নিভাল ইন্টারনেট

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম

১ নম্বর ফাইবার ব্রডব্যান্ড কার্নিভাল ইন্টারনেট নিয়ে এসেছে দেশের প্রথম ইকোসিস্টেম মার্কেটপ্লেস অ্যাপ। ছবি: ভোরের কাগজ
বাংলাদেশের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট জগতে যোগ হতে যাচ্ছে এক নতুন মাত্রা। দেশের সর্ববৃহৎ এবং ১-নম্বর ফাইবার ব্রডব্যান্ড কার্নিভাল ইন্টারনেট নিয়ে এসেছে দেশের প্রথম ইকোসিস্টেম মার্কেটপ্লেস অ্যাপ। এই অ্যাপে ইন্টারনেটের পেমেন্ট এবং অন্যান্য সেবার বাইরেও যোগ হতে যাচ্ছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা, প্রয়োজন মাফিক ক্ষুদ্র বীমা, অনলাইন স্কিল লার্নিং আর ই-কমার্স ভিত্তিক আয়ের সুযোগ-সবকিছু একসঙ্গে।
বিটিআরসির ন্যাশনওয়াইড আইএসপি লাইসেন্স নিয়ে ২০১৫ সালে পথচলা শুরু করে কার্নিভাল। মাত্র এক দশকে তারা দেশের ৪০৩টি উপজেলায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক পৌঁছে দিয়েছে দ্রুততার সঙ্গে। সংযুক্ত করেছে ৩১ হাজারের বেশি গ্রাম আর প্রায় ৪ লাখ গ্রামীণ পরিবার। গ্রাম আর শহর মিলিয়ে আজ কার্নিভালের সেবায় যুক্ত আছেন ৪০ লাখেরও বেশি ব্যবহারকারী। এই বিশাল গ্রাহকভিত্তি ও বিস্তৃত নেটওয়ার্কের কারণে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্বীকৃত সংস্থা APNIC-এর র্যাঙ্কিংয়ে কার্নিভাল ইন্টারনেট এখন বাংলাদেশের নম্বর ওয়ান ব্রডব্যান্ড আইএসপি।
শুধু বিস্তৃত নেটওয়ার্কই নয়, নিজস্ব প্রযুক্তি আর উদ্ভাবনী অবকাঠামো নিয়ে কার্নিভাল যেই বিস্তৃতির মডেল তৈরি করেছে, তা অন্য সবার জন্য অনুকরণীয়। তাদের গ্রুপ টেকনোলজির নিজস্ব উদ্ভাবন ক্যাটেনা-এর অপারেশন ও বিজনেস সাপোর্ট সিস্টেম আর অড্রা-এর নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি প্ল্যাটফর্ম কার্নিভালকে করেছে সবার থেকে আলাদা। সবমিলিয়ে কার্নিভাল ইন্টারনেট আজ শুধু একটি ইন্টারনেট ব্র্যান্ড নয়, তারা এমন একটি জায়গায় দাঁড়িয়েছে, যেখান থেকে মানুষের জীবনযাত্রায় আরও বড় প্রভাব ফেলার মতো সক্ষমতা তৈরি হয়েছে। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আসছে তাদের নতুন ইকোসিস্টেম মার্কেটপ্লেস অ্যাপ।
বাংলাদেশের বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের তরুণরা বৈশ্বিক গিগ ইকোনমিতে প্রথম সারির দেশ হিসেবে অবদান রাখলেও, তাদের বেশির ভাগই ইংরেজিতে দুর্বল। সেই সঙ্গে প্রায় ৮০% মানুষের বাজার উপযোগী দক্ষতার ঘাটতি আছে। ফলে অনেকেই সুযোগ পেয়েও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে না। এর সঙ্গে আছে ৪৭% শিক্ষিত যুব বেকারত্ব। সব মিলিয়ে বিপুল জনগোষ্ঠী স্থায়ী আয়ের বাইরে থেকে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য খাতেও সমস্যা অনেক। দেশে প্রতি ১০ হাজার রোগীর বিপরীতে মাত্র ৭ জন চিকিৎসক। জরুরি প্রয়োজনে, চিকিৎসার খরচ গুনতে বেশিরভাগ পরিবারকে তাদের সঞ্চয়ের ৭০% পর্যন্ত হারাতে হয়। ইন্স্যুরেন্স ব্যবহারের হারও খুবই কম, মোট জিডিপির মাত্র ০.৫%। এই জায়গাতেই পরিবর্তন আনতে চায় কার্নিভাল ইন্টারনেট। কার্নিভাল আসলে ডটলাইনস গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। ডটলাইনস গ্রুপের অধীনে আরও আছে কার্নিভাল কেয়ার (টেলি-ডাক্তার ও হেলথ সলিউশন), বিসেলার (জিরো-ইনভেস্টমেন্ট রিসেলিং প্ল্যাটফর্ম), কার্নিভাল অ্যাস্যিউরসহ (দেশের প্রথম মাইক্রো-ইন্স্যুরেন্স অ্যাগ্রেগেটর) আরও কিছু প্রতিষ্ঠান। এগুলো মিলিয়েই তৈরি হতে যাচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম, যা প্রযুক্তির সহায়তায় সরাসরি গ্রামীণ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে।
এই ইকোসিস্টেমকে একসঙ্গে নিয়ে এসেছে কার্নিভাল ইন্টারনেটের নতুন অ্যাপ। প্রথম বিটা ভার্সনে থাকবে বিল পেমেন্ট এবং অন্যান্য ইন্টারনেট বিষয়ক সুবিধা। এরপর একে একে যোগ হবে (ক) কার্নিভার লার্নিং - বাংলা ভাষায় অনলাইন কোর্স করে দক্ষতা বাড়ানো, ফ্রিল্যান্সিংয়ের যোগ্যতা তৈরি ও বিবিসি জানালার পার্টনারশিপে ইংরেজি শেখার প্ল্যাটফর্ম, (খ) কার্নিভাল কেয়ার -যা অ্যাবোট এর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পার্টনারশিপে স্বাস্থ্য সেবাকে নিয়ে যাবে প্রত্যন্ত গ্রামে, করে তুলবে দ্রুত এবং সহজলভ্য, (গ) কার্নিভাল অ্যাস্যিউর - দেশের শীর্ষ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে এনে স্বাস্থ্য ও জীবন বীমাকে ইতিমধ্যে হাতের নাগালে নিয়ে এসেছে, (ঘ) বিসেলার - ইন্টারনেট হাতে যে কাউকে নতুন আয়ের সুযোগ করে দিবে, কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই।
সবচেয়ে বড় কথা, একজন ব্যবহারকারী কার্নিভাল অ্যাপ থেকেই বিশ্বমানের ফাইবার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার পাশাপাশি পেতে পারেন দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ, স্বাস্থ্যসেবা আর আর্থিক সুরক্ষা। কার্নিভাল বিশ্বাস করে - ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এখন কেবল নির্ভরযোগ্য গ্লোবাল কানেক্টিভিটি নয়, তা হয়ে উঠবে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত মানুষের জীবনকে বদলে দেয়ার হাতিয়ার।