কোক-পেপসি বয়কটে বিশ্বের ৫০টি দেশ মাতাচ্ছে শুকরান কোলা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ০১:২৪ পিএম
ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে চলছে দেশটির সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন কোম্পানি ও পণ্যের বয়কট আন্দোলন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্য মুসলিম দেশের নাগরিকরাও এতে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। বয়কটের এই আন্দোলন তোপের মুখে পড়ে কেএফসি, স্টারবাকস, ম্যাকডোনাল্ডস, পেপসি, কোকা-কোলার মতো বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড।
বিশ্বজুড়ে তীব্র আন্দোলনের কোকের বিক্রি একেবারে তলানিতে। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্য মাতাচ্ছে হালাল কোমল পানীয় ব্র্যান্ড শুকরান কোলা। মরুর দেশগুলো ছাড়াও ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রমশ বাড়েছে শুকরান পানীয়র চাহিদা। ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের কারণে কোমল পানীয় বাজারে অনেকের কাছে কোকা-কোলার বিকল্প হয়ে উঠেছে শুকরান কোলা।
শুকরান কোলার চাহিদা এতই বেড়েছে যে, একটি কারখানায় উৎপাদন করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই প্রতিষ্ঠানটি জর্ডান, সৌদি আরব, আরব আমিরাত, মিশর এবং তুরস্ক থেকে নিজস্ব সুপারভিশনের মাধ্যমে উৎপাদন করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
উদ্যোক্তারা জানান, আরবি ভাষাভাষীদের মধ্যে শুকরান শব্দটি অধিক ব্যবহৃত বরকতময় ও ধন্যবাদসূচক শব্দ। ফলে আরব অঞ্চলের মানুষদের কাছে শুকরান নামটি অধিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তাই উদ্যোক্তারা নতুন এ ব্র্যান্ডকে বিশ্বব্যাপী সম্প্রসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
বিশ্বের ৫০টিরও অধিক দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা স্থানীয়ভাবে কোকা-পেপসির পরিবর্তে শুকরানের বাজারজাতের জন্য নিয়মিত যোগাযোগ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক বিপণন বিভাগ অভিজ্ঞতা এবং সক্ষমতা যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে প্রতিদিন বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন শহরে ডিস্ট্রিবিউটর নিয়োগ করে যাচ্ছে।
শুকরান বিভিন্ন দেশের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন বিভিন্ন ফ্লেভারের কোমল পানীয় বাজারজাত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কোলা জিরো, লেমন জিরো, সোডা ওয়াটার, বাচ্চাদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত বেবি কোলাসহ বিভিন্ন নতুন ফ্লেভার।
এছাড়া কার্বনেটেড পানীয়র পাশাপাশি জুস জাতীয় অরেঞ্জ, ম্যাংগো, স্ট্রবেরি, আপেল, পাইনাপেলসহ বিভিন্ন ড্রাই ফুড উৎপাদনের জন্য ব্যাপক এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
শুকরান অল্প সময়ের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের ফলোয়ারের সংখ্যা মিলিয়ন অতিক্রম করেছে। তাদের ইনস্টাগ্রামেও অর্ধ মিলিয়নের অধিক ফ্যান-ফলোয়ার যুক্ত হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর বিশ্বজুড়ে পানীয়র বেশ কিছু ছোট ছোট ব্র্যান্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শুকরানের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি বাজার দখল করা ব্রান্ডগুলোর মধ্যে ইরানের জমজম অন্যতম। মুসলমানের সবথেকে বেশি আস্থা পবিত্র জমজমের নামের সাথে মিল থাকায় এ পানীয়র বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে যাবার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
শুকরান-জমজমের পাশাপাশি প্যালেস্টাইন কোলা, জি কোলা, আফগানিস্তানের পামির কোলা ও সাফা ড্রিংকস বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা বাড়ছে। সৌদি আরবের কিনজা, ফিফা পানীয়র বিক্রি ৬০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
ইসরায়েলের বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বয়কটের আন্দোলনের ফলে বাংলাদেশে আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কোম্পানি তাদের পানীয় মোজোর চাহিদা অভূতপূর্ব বেড়েছে। এছাড়া মোজো বিক্রির একটি অংশ ফিলিস্তিনের তহবিলে দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বর্তমানে মোজো কোলার বিক্রি ১৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে।