দু’দেশের সম্পর্কের অবনতি, কতটা ক্ষতির মুখে ভারত!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর অনেকটা মাথা গরম হয়ে পড়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশকে উত্তেজিত করেই চলছে দেশটি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের অতিরঞ্জিত তথ্য ও ভুয়া খবর প্রকাশ করে জল ঘোলার চেষ্টায় লিপ্ত।
সম্প্রতি আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও জাতীয় পতাকা নিয়ে টানা হেঁচড়ার ঘটনাও ঘটে।
এ নিয়ে দু দেশের সম্পর্কের অবনতি এখন প্রকাশ্যে। তবে এ সম্পর্কের অবনতির ফলে বাংলাদেশের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে ভারতেরই এমনটাই মনে করছেন কূটনীতিক এবং ব্যবসায়ীরা।
তাদের মতে ভারতের ডলার আয়ের অন্যতম উৎস বাংলাদেশ। দুই দেশের কূটনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কে ভাটা পড়লে ভারতেরই আয় কমে ক্ষতির মুখে পড়বে।
ইতোমধ্যে ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। সম্পর্ক আরও বিঘ্নিত হলে বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য, রপ্তানিপণ্যের কাঁচামালে ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমদানি এবং চিকিৎসাপ্রাপ্তির বিকল্প থাকায়, বাংলাদেশের ক্ষতি ভারতের তুলনায় কম হবে।
ভারতীয় ঠিকাদারি এবং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোরও ব্যবসা রয়েছে বাংলাদেশে। ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ থেকে বছরে ২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি নিয়ে যায় ভারতে। বিপরীতে ভারত থেকে আসে দুই বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি অর্থ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারত থেকে ৯৪ হাজার ৩৩ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ১৬ হাজার ৯৮২ কোটি টাকার পণ্য।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহসভাপতি শোয়েব চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের পণ্য আমদানির দ্বিতীয় উৎসস্থল ভারত। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর আমদানি কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ। রপ্তানি কমেছে প্রায় ২৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ আউটবাউন্ড ট্যুর অপারেটরস ফোরাম সূত্র জানায়, প্রতি বছর গড়ে আট লাখ মানুষ বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়। এর বড় অংশই যায় ভারতে।
এদিকে বাংলাদেশিদের ভাড়া না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গের হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বাংলাদেশি পর্যটক হাতেগোনা। তাই ক্ষতি হবে না জেনেই প্রচার পেতে বয়কটের ডাক দিচ্ছেন এসব ব্যবসায়ী।
কলকাতার নিউমার্কেট বাংলাদেশি ক্রেতাদের ওপর নির্ভরশীল। এখানকার ব্যবসায়ীরা বয়কটের ডাক দেননি। নিউমার্কেট হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এ এলাকায় দুই শতাধিক হোটেল ও শতাধিক মানি এক্সচেঞ্জার। রেস্তোরাঁ ব্যবসা থেকে পরিবহন, পর্যটন সবই বাংলাদেশি পর্যটকনির্ভর। তাই বয়কটের প্রশ্নই আসে না।ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্যবসায়িকভাবে অসফল মানুষরাই বয়কটের খেলায় মেতেছে।
ভারতের বেসরকারি স্বাস্থ্য খাত বাংলাদেশি রোগীর ওপর নির্ভরশীল। কলকাতা ও চেন্নাইয়ের বড় হাসপাতালগুলোর জনসংযোগ কর্মকর্তারা জানান, বয়কট ঘোষণা ব্যবসার খুবই ক্ষতি করছে।