হিরোশিমায় পারমাণবিক বিভীষিকার ৮০ বছর

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৬ এএম

ছবি : সংগৃহীত
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিট। জাপানের হিরোশিমা শহরে তখন এক সাধারণ দিনের সূচনা। কিন্তু মুহূর্তেই ইতিহাসের ভয়াবহতম দৃশ্যের জন্ম দেয় মার্কিন বোমারু বিমান ‘এনোলা গে’, যখন এটি ফেলে ‘লিটল বয়’ নামক একটি পারমাণবিক বোমা।
মাত্র কয়েক সেকেন্ডে মুছে যায় ৭০ হাজারের বেশি প্রাণ, ধ্বংস হয় গোটা শহর, আর বিশ্ববাসী প্রথমবারের মতো প্রত্যক্ষ করে পারমাণবিক যুদ্ধের ভয়াবহতা।
সেই ঘটনার ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুধবার (৬ আগস্ট) হিরোশিমায় আয়োজন করা হয় শ্রদ্ধাঞ্জলি ও স্মরণ অনুষ্ঠানের।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গরম আবহাওয়ার মধ্যেও কালো পোশাক পরে সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী এবং বেঁচে যাওয়া বয়স্ক নাগরিকসহ হাজারো মানুষ শহীদদের স্মরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। সকলে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সেই কালো সকালকে স্মরণ করে। পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল সেই ঐতিহাসিক গম্বুজাকৃতি ধ্বংসস্তূপ, যেটি এখনও বহন করে যুদ্ধের নির্মম স্মৃতি।
আরো পড়ুন : গাজায় নিহত আরো ৮৩, দুর্ভিক্ষে বাড়ছে শিশুদের মৃত্যুহার
হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই তার ভাষণে বিশ্বব্যাপী বাড়তে থাকা সামরিক শক্তি ও অস্ত্র প্রতিযোগিতার প্রবণতার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা এর বাস্তব উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, বিশ্ব যেন ইতিহাস থেকে পাওয়া শিক্ষাকে অগ্রাহ্য করছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেন, বিশ্ব থেকে পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলের ক্ষেত্রে জাপানকে নেতৃত্ব দিতে হবে। এটি আমাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব।
হিরোশিমা হামলায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ নিহত হন। পরবর্তীতে ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে দ্বিতীয় পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপে প্রাণ হারান আরো ৭৪ হাজার মানুষ। এরপর ১৫ আগস্ট জাপান আত্মসমর্পণ করে, যার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে।
বর্তমানে হিরোশিমা একটি আধুনিক ও উন্নত শহর। যার জনসংখ্যা প্রায় ১২ লাখ। তবে সেই অতীতের ক্ষত এখনও অনেকের স্মৃতিতে জ্বলজ্বলে।
এবারের স্মরণ অনুষ্ঠানে ছিল প্রায় ১২০টি দেশ ও অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব। প্রথমবারের মতো অংশ নেয় তাইওয়ান ও ফিলিস্তিন। উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতও। তবে রাশিয়া ও চীন অংশ নেয়নি।