×

বাজেট

বাজেটে স্বাস্থ্যখাত

খুব বেশি পরিবর্তন নেই, বরাদ্দের সদ্ব্যবহার হোক

Icon

সেবিকা দেবনাথ

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৭:০০ পিএম

খুব বেশি পরিবর্তন নেই, বরাদ্দের সদ্ব্যবহার হোক

ছবি: সংগৃহীত

প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ খাতের জন্য ৪১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা মোট বাজেটের প্রায় ৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। 

গত অর্থবছরে অর্থাৎ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিলো ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা, যা ছিলো মোট বাজেটের ৫ দশমিক ২ শতাংশ। সে হিসাবে নতুন অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে ৫০১ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে। আর গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১ দশমকি ২১ শতাংশ। 

সোমবার (২ জুন) বিকেলে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তৃতা সম্প্রচার করে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের বিষয়টি গতানুগতিক। বড় ধরনের কোন পরিবর্তন নেই। তবে বরাদ্দকৃত অর্থের সদ্ব্যবহার হোক এমনটাই প্রত্যাশা তাদের। 

বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সকল নাগরিককে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনতে সেবার পরিধি বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দক্ষ জনবল নিয়োগে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের শূন্য পদ পূরণে চিকিৎসক, সেবিকা, টেকনিশিয়ান, ফার্মাসিস্ট ও স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়োগ ত্বরান্বিত করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টির সমন্বিত পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। 

দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আগামী অর্থবছরে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাদানের লক্ষ্যে অতিরিক্ত ৪ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা এবং সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির জন্য ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করছি। 

এছাড়া বাজেটে উন্নত দেশসমূহের চাহিদা অনুযায়ী কেয়ারগিভার খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা সম্ভব হলে একদিকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসারিত হবে এবং একইসাথে প্রবাস আয় অর্জনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। এ লক্ষ্যে কেয়ারগিভারদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। 

পাশাপাশি নার্সিং শিক্ষায় পিএইচডি কোর্স চালু এবং আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য একটি নার্স শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বিষয় বিবেচনায় রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে দেশে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে রেফারেল হাসপাতালসমূহের পাশাপাশি ৫০ শয্যার অধিক সকল হাসপাতাল স্থাপনের জন্য যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম আমদানিতে শুল্ক-কর হ্রাসের প্রস্তাব করা হয়েছে। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে কোন দেশের বাজেটের ১২ থেকে ১৫ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ থাকা উচিত। গত কয়েকটি অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ৬ শতাংশের নিচেই রয়ে গেছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বরাদ্দ বাড়লেও এই বরাদ্দ দেশের ১৭ কোটির বেশি মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য পর্যাপ্ত নয়। 

প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ দু’টি প্রস্তাবনার কথা জানান। 

তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয়ার কথা বলা হয়েছে তা যেনো রিভিশনের নামে সেই অর্থ যেনো না কমানো হয়। সরকার এমন কিছু পদক্ষেপ নিবে, যাতে যে কারণে বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে পারে না সেই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠে বরাদ্দকৃত অর্থ শতভাগ ব্যবহার করতে পারে। 

অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য বিশিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞানী অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী ভোরের কাগজকে বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশ এই বাজেটে প্রতিফলিত হবে এমন প্রত্যাশা করিনি। আমাদের প্রত্যাশা প্রস্তাবিত বাজেটের অর্থ যাতে ব্যবহৃত হয়। 

এই বছর বেশ কিছু অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি) পাস না হওয়ায় যেই খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ অব্যবহৃত রয়ে গেছে। আমি মনে করি বাজেটে যে বরাদ্দই হয়েছে এর যাতে সদ্ব্যবহার হয়, যা হবে জনমুখী। বড় বড় স্থাপনার চাইতে প্রথামকি স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে যাতে ব্যয় বাড়ানো হয়। 

প্রস্তবিত বাজেট গতানুগতিক হয়েছে বলে মনে করেন প্রিভেনটিভ মেডিসিন ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, স্বাস্থ্য জনজীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জাতির সুস্থতা রক্ষা না হলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যহত হবে শ্রম ঘণ্টা কমে যাবে। আমাদের মতো দেশগুলোতে স্বাস্থ্যখাত হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। কিন্তু আমরা দেখতে পেয়েছি স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব করেছে তার সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটের মিল নেই। সংস্কার ভাবনাকে বাস্তবায়িত করার জন্য বাজেটে যে বরাদ্দ থাকা দরকার এর ধারে কাছেও নেই। এর মানে হলো, ‘থোড় বড়ি খাড়া; খাড়া বড়ি থোড়’। নতুন কোন দিক নির্দেশনা প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য বাজেটে নেই। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

ড. ইউনূসের লন্ডন সফর: গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয়‌

ড. ইউনূসের লন্ডন সফর: গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয়‌

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হলেন লি জে-মিয়ং

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট হলেন লি জে-মিয়ং

বিদেশি ভিসা বন্ধের জন্য আমরাই দায়ী: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিদেশি ভিসা বন্ধের জন্য আমরাই দায়ী: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নতুন অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তন

নতুন অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা পরিবর্তন

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App