বিচারপতি খায়রুলের গ্রেপ্তারে মির্জা ফখরুলের শুকরিয়া, চাইলেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:৩৪ পিএম

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক এবং বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত
সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দায়িত্বে থাকাকালীন এই বিচারপতি জাতির অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল বলেন, ভবিষ্যতে যেন কেউ রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে উচ্চপদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার না করে, সে জন্য খায়রুল হকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। খায়রুল হক বাংলাদেশের বড় শত্রুদের একজন। বড় দায়িত্বে থেকে দেশের বিশাল ক্ষতি করেছেন। তিনি গ্রেপ্তার হওয়ায় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতির পদে থেকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করেছেন খায়রুল হক। কিন্তু সেখানে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যে রায় দিয়েছেন, সেটির মাধ্যমে একইসঙ্গে জনগণ ও রাষ্ট্রকে প্রতারিত করেছেন খায়রুল হক।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে খায়রুল হক যে সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনেক পার্থক্য ছিল। আমরা মনে করি, তার দেয়া সংক্ষিপ্ত রায়টি রাষ্ট্রীয় স্বার্থ বিরোধী। আমরা সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ যে, দেরিতে হলেও এই সাবেক বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে রায় পরবর্তী রাজনৈতিক সংকটের জন্য খায়রুল হক শতভাগ দায়ী। তাকে কী ধরনের শাস্তি দেয়া উচিত—এই প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেটি নির্ধারণের তিনি কেউ নন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা চাই, এসব বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হোক এবং আইনি বিধান অনুযায়ী বিচার হোক। তবে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ওই পদে থেকে রাষ্ট্রের ক্ষতি করার সাহস না পায়। বিচার ব্যবস্থা জনগণের সবচেয়ে আস্থা জায়গা। কিন্তু খায়রুল হক রাজনৈতিক মানসিকতার কারণে সেই আস্থা ধ্বংস করেছেন, যা দেশের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়েছে।
এদিন সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজ বাসভবন থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে। ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০১০ সালে খায়রুল হক শপথ নেন। পরের বছর ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন। ২০১৩ সালে তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা একই পদে পুনর্নিয়োগ দেয়া হয় সাবেক প্রধান বিচারপতিকে।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন খায়রুল হক। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।