ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগ সিটি ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২১ পিএম
ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে ‘অমানবিক নির্যাতন’ চালানোর অভিযোগ সিটি ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে
সিটি ইউনিভার্সিটি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘটা সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে নারকীয় কায়দায় নির্যাতন চালানো হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। ডিআইইউ-এর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই ঘটনাকে পূর্বপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ভাষ্যমতে, ঘটনার সূত্রপাত একটি তুচ্ছ ঘটনা (থুতু পড়া) থেকে হলেও, পরবর্তীকালে সিটি ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা রাতের অন্ধকারে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ঘুমন্ত ও নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের ওপর সশস্ত্র ও পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ চালায়। এই হামলায় ডিআইইউ-এর বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের ছাত্রদের সেখানে জিম্মি করে রাখার পেছনে ন্যক্কারজনক উদ্দেশ্য কাজ করেছে, এটি এখন স্পষ্ট।
ডিআইইউ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, এই হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। তাদের মতে, একটি স্বার্থান্বেষী ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী গোষ্ঠী পূর্বপরিকল্পিতভাবে এই হামলার ন্যারেটিভ তৈরি করেছে এবং সিটি ইউনিভার্সিটির কিছু ছাত্রছাত্রীর সাথে মিশে ঘটনাকে উত্তেজিত ও বিকৃত করেছে।
তারা আরও অভিযোগ করে, যখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা মিলিত হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিলেন, ঠিক তখনই পরিকল্পিতভাবে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। ডিআইইউ এটিকে মনগড়া নয়, সুসংগঠিত উস্কানিমূলক কার্যক্রম বলে মনে করছে।
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটি আনা হয়েছে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করা প্রসঙ্গে। ডিআইইউ-এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের যেভাবে জিম্মি করে রেখে নারকীয় কায়দায় নির্যাতন ও জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে, তা কোনো সভ্য রাষ্ট্রে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
তারা প্রশ্ন তুলেছে, এই ধরনের কর্মকাণ্ড আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা রাষ্ট্রীয় কোনো সংস্থাও কখনো করে না, তাহলে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও তার শিক্ষার্থীরা কীভাবে এমন অমানবিক আচরণে লিপ্ত হতে পারে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও প্রশ্নবিদ্ধ।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এই ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে। তাদের প্রধান দাবিগুলো হলো প্রাপ্ত সাক্ষ্য, ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানের ভিত্তিতে যারা সরাসরি নিরীহ ছাত্রদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের শনাক্ত করে মূল আক্রমণকারী হিসেবে দায়ী করা। যেসব বাহ্যিক বা স্বার্থান্বেষী লোক ও গোষ্ঠী ঘটনাকে উস্কে দিয়েছে এবং সংঘাতকে পরিকল্পিতভাবে তৎপর করেছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনি আওতায় আনা। উপযুক্ত কার্যালয় ও গোয়েন্দা সংস্থাকে অবিলম্বে সক্রিয় করে ব্যাপক তদন্ত পরিচালনা করা। এবং দায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে ভবিষ্যতে শিক্ষাঙ্গনে এই ধরনের সন্ত্রাসী আচরণ প্রতিরোধ করা যায় এবং নিরীহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
