রাজাকারদের ছবি প্রদর্শনের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের বিবৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী এবং ধর্ষণকারীর অন্যতম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ‘ইসলামী ছাত্রশিবির’ আয়োজিত ‘৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক একটি কর্মসূচিতে বাঙালি জাতির মহাবিপর্যয় ৭১ গণহত্যাকে বন্ধ করে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর ছবি ও নাম প্রদর্শিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বীজ রোপিত হয়েছে। এর প্রতি ধূলিকণাও আমাদের রক্তস্নাত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বহন করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ঢুকে, নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারী হত্যা করে। ১৪ ডিসেম্বর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রায় ৩০০ জন শহীদ হন।
আমরা মনে করি, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত গণনারী, নারী ধর্ষণ ও নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত, দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি ও নাম প্রদর্শন জাতির সেই আত্মত্যাগ এবং মুক্তিযুদ্ধের অবমাননাকর পাশবিক ও সীমা লঙ্ঘনপূর্ণ। এই ঘটনার নিন্দা ও ধিক্কার জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।
আমরা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। একইসঙ্গে আমরা আরো বলতে চাই, ভবিষ্যতে এ ধরনের তৎপরতার বিষয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে এবং তা ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে আমাদের আহ্বান– বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব ও মর্যাদা এবং আমাদের পূর্বসূরিদের আত্মত্যাগ, আন্দোলন ও অর্জনের কোনোভাবেই অপমানিত হতে দেয়া যাবে না। এই মহান দায়িত্ব পালনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষে
সৈয়দ বদরুল আহসান, ড. নীলু কামরুল নাহার, ড. ওবর সেলিম শের, ড. এবিএম নাসির, ড. আবু নাসের রাজীব, ড. মোহাম্মদ মাহমুদ হাসান, ড. শামীম আহমেদ, সুলতানা রহমান, হাকান আল রশিদ, অর্ণপা পাল, শাকিলুর রহমান, সরদার ফারুক, আবদুল্লাহ আল ইমরান, কে এম মাসুদ আলী, ফকরুল ইসলাম চৌধুরী, খালেদ আহমেদ শামীম, আব্দুল কাদের মির্জা, মোহাম্মদ চৌধুরী বিপ্লব, আহমেদ হোসেন, রিয়াজ আহমেদ, আসামা হক, সোহানা আমিন, মাসুদুল ইসলাম, আলী নূর, সাইদুল ইসলাম, দেবরাজ দেব, মেহরুন নাহার মেমলা, সানজিদা আনোয়ার প্রীতি প্রমুখ।