কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করল ভারত

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:০৪ পিএম

কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে ফের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড শুরু করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। মূলত শহীদ দিবসের অনুষ্ঠান ঠেকাতে শ্রীনগরের গুরুত্বপূর্ণ অনেক রাস্তা ও এলাকা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
১৯৩১ সালের উপনিবেশবিরোধী আন্দোলনের সময় শহীদদের স্মরণে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এছাড়া অনুষ্ঠানে যোগদান ঠেকাতে মুখ্যমন্ত্রীসহ কাশ্মীরের প্রধান প্রধান নেতাদের গৃহবন্দি করে রাখে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। খবর এনডিটিভির।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার সকালে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
বিশেষ করে খাজা বাজার এলাকায় প্রবেশ একেবারে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। সেখানেই ১৯৩১ সালের আন্দোলনে নিহত ২২ জন কাশ্মিরির কবরস্থান অবস্থিত।
শুধুমাত্র সরকারি বা নিরাপত্তা বাহিনীর যানবাহনকেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
এদিকে কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, তাকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, বাড়ির দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ, পুলিশ আর আধাসামরিক বাহিনী যেন কারারক্ষী।
তিনি আরো বলেন, শ্রীনগরের বড় বড় সেতুগুলোও বন্ধ। শুধু মানুষকে একটিমাত্র ঐতিহাসিক কবরস্থানে যেতে বাধা দিতেই এই ব্যবস্থা।
এদিকে এই ঘটনাকে গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে দেয়। এরপর থেকে অঞ্চলটির রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার চরমভাবে সীমিত হয়ে পড়ে।
আগে প্রতি বছর ১৩ জুলাই ‘কাশ্মির শহীদ দিবস’ হিসেবে পালিত হতো, যা সরকারি ছুটির দিনও ছিল। এই দিনটি ১৯৩১ সালে ডোগরা শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত ২২ জন কাশ্মীরি নাগরিক পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার স্মৃতি বহন করে।
এ বছর অবশ্য কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রশাসনের কাছে কবরস্থানে যাওয়ার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতি চাইলেও তা বাতিল করে দেওয়া হয়।
শ্রীনগর পুলিশ এক্সে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, সব ধরনের জনসমাবেশ ও সমবেত হওয়ার আবেদন নাকচ করা হয়েছে। তারা হুঁশিয়ারি দেয়, আদেশের যেকোনও ধরনের লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের মুখপাত্র তানভীর সাদিক বলেন, ১৩ জুলাই কেবল একটি তারিখ নয় এটি আত্মত্যাগ, মর্যাদা এবং ন্যায়ের লড়াইয়ের প্রতীক। তিনি আরো বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ ও মর্যাদার সঙ্গে শহীদদের স্মরণ করব, আমাদের সংকল্প অটুট থাকবে।