![]() |
অবশেষে বিমানে ইসরায়েল ছাড়লেন গ্রেটা থানবার্গ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ০৮:২৩ এএম

সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থানবার্গ। ছবি : সংগৃহীত
গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজ থেকে আটক হওয়া সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থানবার্গ ফ্রান্সগামী একটি ফ্লাইটে ইসরায়েল ছেড়েছেন। মঙ্গলবার (১০ জুন) ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি পোস্ট দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, গ্রেটা থানবার্গ ফ্রান্স হয়ে সুইডেনগামী একটি ফ্লাইটে করে ইসরায়েল ছেড়েছেন।
ওই পোস্টের সঙ্গে থানবার্গের দুটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে থানবার্গকে উড়োজাহাজে উঠতে দেখা গেছে।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বাহো মঙ্গলবার বলেন, সোমবার ‘ম্যাডলিন’ নামের জাহাজটি থেকে গ্রেটা থানবার্গের সঙ্গে আটক হওয়া অন্তত পাঁচজন অধিকারকর্মী স্বেচ্ছায় ইসরায়েল ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তাদের বিতাড়িত করা হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, গত রাতে আমাদের কনসাল ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের হাতে আটক ছয়জন ফরাসি নাগরিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সক্ষম হন। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন স্বেচ্ছায় ইসরায়েল ছাড়তে সম্মত হয়েছেন এবং মঙ্গলবারই দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অপর পাঁচজনকে বিতাড়িত করা হবে।
সোমবার ইসরায়েলে আটক হওয়া ফরাসি নাগরিকদের মধ্যে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসানও আছেন।
আরো পড়ুন : ইসরায়েলের দুই উগ্রপন্থি মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মুখপাত্র ডেলফিন কলার্ড বলেন, গত কয়েক দিন ও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন।
ম্যাডলিন জাহাজে থাকা রিমা হাসান ও তার সঙ্গীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এ যোগাযোগ রাখেন তিনি।
এর আগে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল, যারা বিতাড়নসংক্রান্ত কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে রাজি হবেন না এবং ইসরায়েল ছাড়তে চাইবেন না, তাদের বিতাড়িত করার অনুমতি পেতে বিচারিক কর্তৃপক্ষের সামনে হাজির করা হবে।
গ্রেটাসহ ১২ জন অধিকারকর্মী গাজা অভিমুখী একটি ত্রাণবাহী জাহাজে ছিলেন। আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) পরিচালিত জাহাজটি ফিলিস্তিনের গাজার ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ নিয়ে ইতালি থেকে রওনা করেছিল।
স্থানীয় সময় গত রোববার মধ্যরাতে গাজা থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজটি আটকে দেয় ইসরায়েলের নৌবাহিনী।
জাহাজে থাকা অধিকারকর্মীদেরও আটক করা হয়। পরে গ্রেটা থুনবার্গকে ইসরায়েল থেকে বিতাড়িত করতে তেল আবিব বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
‘ম্যাডলিন’ জাহাজে থুনবার্গ ছাড়াও যে ১১ জন অধিকারকর্মী ছিলেন তারা হলেন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ফ্রান্সের ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, ফ্রান্সের ওমর ফায়াদ, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, নেদারল্যান্ডসের মার্কো ফন রেনেস ও ফ্রান্সের রিভা ভিয়া।
গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এ অবস্থায় অনাহারে ভুগে বেশ কয়েকটি শিশু মারা যায়। ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ‘ম্যাডলিন’ নামের এ জাহাজ ১ জুন ইতালির সিসিলির কাতানিয়া থেকে যাত্রা শুরু করে।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গাজার মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে যেসব সহায়তা দরকার, সেগুলো জাহাজটিতে ছিল। এর মধ্যে আছে চিকিৎসার সরঞ্জাম, ময়দা, চাল, শিশুদের দুধ, ডায়াপার, নারীদের স্যানিটারি পণ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট।