যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানির অস্ত্র নিয়ে ১৪ কার্গো বিমান ইসরায়েলে

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ জুন ২০২৫, ১০:৫৭ এএম

এ চালান যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে এসেছে। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েল-ইরান চলমান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির পাঠানো নতুন অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের চালান পৌঁছেছে ইসরায়েলে। গত বৃহস্পতিবার আরো কয়েকটি পরিবহন উড়োজাহাজ (কার্গো) এসব সরঞ্জাম নিয়ে ইসরায়েলে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
তুরস্কের সরকারি সংবাদমাধ্যম আনাদলু জানিয়েছে, এ চালান যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি থেকে এসেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে বলা হয়েছে, ইরানের সাম্প্রতিক হামলা শুরুর পর শুধু এ পর্যন্তই ১৪টি কার্গো বিমানে অস্ত্র পাঠানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৮০০টির বেশি কার্গো বিমান সামরিক সহায়তা নিয়ে ইসরায়েলে পৌঁছেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতে, এই অস্ত্র সরবরাহ দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং প্রস্তুতি ও মজুত বৃদ্ধির লক্ষ্যেই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সর্বশেষ চালানে কী ধরনের অস্ত্র এসেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি।
ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে হিমশিম, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অপরিহার্য
এই সরঞ্জাম সরবরাহের খবর এমন এক সময়ে এলো, যখন ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল–এর এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইরানের একাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে গিয়ে ইসরায়েলের ‘অ্যারো’ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ইন্টারসেপ্টর মজুত প্রায় শেষের পথে। যদিও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এ তথ্য অস্বীকার করেছেন।
মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, ইসরায়েলকে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পাঠিয়েছে।
আরো পড়ুন : ইসরায়েলে একযোগে ২৫ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ইরান যদি একই হারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যেতে থাকে, তবে মার্কিন সহায়তা ছাড়া ইসরায়েলের মজুদ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ১০ থেকে ১২ দিনের বেশি প্রতিরক্ষা বজায় রাখা কঠিন হবে। এমন পরিস্থিতিতে তাদের প্রতিটি প্রতিরক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র বেছে বেছে ব্যবহার করতে হবে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েলকে এখন প্রতিটি আক্রমণ প্রতিহত না করে নির্বাচন করতে হবে কোনটা ঠেকাবে। তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইতোমধ্যে চাপে রয়েছে।
ভূগর্ভস্থ ফোর্ডো কেন্দ্রে হামলার সম্ভাবনা ও ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা
এদিকে, আল-জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েল এখনও ইরানের ফোর্দো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে কার্যকর হামলা চালাতে পারেনি। কারণ, এই কেন্দ্রটি পাহাড়ের নিচে—৮০ থেকে ৯০ মিটার গভীরে অবস্থিত। এত গভীরে হামলার জন্য প্রয়োজন জিবিইউ-৫৭ ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা, যা কেবল যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই রয়েছে। এতে ১২ টনের বেশি বিস্ফোরক থাকে এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বোমাটি ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর (এমওপি) নামে পরিচিত।
আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক কেলসি ডেভেনপোর্ট বলেন, ইসরায়েল যদি এসব ভূগর্ভস্থ স্থাপনায় হামলা করতে চায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অপরিহার্য।