![]() |
দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট কী ঘটেছিল?

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৯ পিএম

দুর্ঘটনার ১০ বছর আগে ১৯৭৪ সালে বিমানটি। ছবি: সংগৃহীত
১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকায় খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে অবতরণ করার সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফকার এফ২৭-৬০০ জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এখন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) কাছাকাছি একটি জলাভূমির মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বিমানবন্দর থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পূর্বনির্ধারিত ঘরোয়া যাত্রী ফ্লাইট পরিচালনা করছিল।
মোট ৪৯ জনের মৃতের সংখ্যাসহ এই দুর্ঘটনা ছিল বাংলাদেশের মাটিতে ঘটা সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা এবং এয়ারলাইন্সের 'সবচেয়ে খারাপ দুর্ঘটনা'র একটি। এসটু-এবিজে হিসেবে নিবন্ধিত ফকার এফ২৭-৬০০ নামের উড়োজাহাজটি ১৯৭১ সালে তৈরি করা হয়েছিল। এটি প্রথমে ভারতীয় এয়ারলাইন্সের জন্য চালনা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ভারত সরকার থেকে বাংলাদেশকে দেয়া সহযোগিতার অংশ হিসেবে সেটি ১৯৭২ সালে বিমানকে দেয়া হয়। দুর্ঘটনার আগ পর্যন্ত উড়োজাহাজটি মোট ২৪,০৮৫ চক্র এবং মোট ১৫,৫৯৫ এয়ারফ্রেম ঘণ্টা উড়েছিল।
পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন কানিজ ফাতেমা রোকসানা, যিনি বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পাইলট হিসেবে পরিচিত।
দুর্ঘটনার দিন ঢাকার আবহাওয়া খুব খারাপ ছিল। উদ্দাম ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দৃষ্টিসীমা সীমিত ছিল। এই অবস্থায় বিমানটিকে বেতার যোগাযোগের মাধ্যমে অবতরণ করানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাইলট প্রথমে ৩২ নং রানওয়েতে অবতরণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু রানওয়ে দেখা না যাওয়ায় এবং শেষ মুহূর্তে পাইলট বুঝতে পারেন যে তিনি ভুল দিকে অগ্রসর হচ্ছেন, তাই অবতরণ না করে আবার উড়ে যান।
দ্বিতীয় দফায় আইএলএস ব্যবহার করে অবতরণ করার সিদ্ধান্ত নেন পাইলট। নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে পাইলটকে রানওয়ে ১৪তে অবতরণ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। ভারী বর্ষণের মধ্যে প্রবল ঝোড়ো বাতাসে আবার অবতরণের চেষ্টা চালালে পার্শ্বমুখী বাতাসের ঝাপটার কারণে অবতরণ আবার ব্যর্থ হয়। তৃতীয়বার অবতরণ করার সময় (রানওয়ে ১৪ তে দ্বিতীয়বার) বিমানটি রানওয়ে থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে একটা ডোবায় অবতরণ করে এবং বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত হওয়ার স্থানটি ছিল উত্তরা জসিমউদ্দিন সড়কের কাছে।
এতে ৪ জন ক্রু ও ৪৫ জন যাত্রীসহ সবাই নিহত হন। যাত্রীদের মধ্যে একজন ব্রিটিশ, একজন জাপানি ও বাকিরা বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। যাত্রীদের বেশীরভাগ (৩৩) মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার জন্য একটি সংযোগ ফ্লাইট ধরতে ঢাকা ভ্রমণ করছিলেন।
সবশেষ সোমবার (২১ জুলাই, ২০২৫) বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়ে ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। এরপরই সেই বিমান দুর্ঘটনা আবারো সামনে এসেছে।