জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন বাংলাদেশের স্বার্থেই করা হয়েছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৫ পিএম

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের স্বার্থেই ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। প্রয়োজনে ছয় মাসের নোটিশে এ কার্যালয় প্রত্যাহার করতে পারবে সরকার। তবে আমি মনে করি, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের ভিন্নমত প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, দুই বছর পর এই চুক্তি পর্যালোচনা করা হবে। আমরা আমাদের স্বার্থকে সামনে রেখেই এই পদক্ষেপ নিয়েছি। জাতিসংঘ প্রস্তাব দেওয়ার পর আমরা তৎক্ষণাৎ সাইন করিনি। সময়ে নিয়ে বিশ্লেষণ করে তবেই চুক্তি করেছি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতের প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান রয়েছে।
ব্রহ্মপুত্র নদীর উজানে চীনের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ ধরনের প্রকল্প রোধ করতে পারবে না। তবে সতর্ক থাকবে যেন কোনো বড় ধরনের ক্ষতি না হয়। আমাদের নদীগুলোর উৎস তো বাংলাদেশে না। তাই আমাদের দেখতে হবে এই প্রকল্পগুলো যেন কোনো ক্ষতিকর প্রভাব না ফেলে বা খুব সীমিত প্রভাব ফেলে। ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত আশ্বস্ত করেছেন যে এ প্রকল্পগুলো পানি প্রত্যাহারের জন্য নয়, বরং ধাপে ধাপে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে, যা পানিপ্রবাহে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে না। তাই এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান শুল্ক আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আলোচনা এখনো চলমান এবং চূড়ান্ত হয়নি। যারা আলোচনা করছেন, তাদেরই এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা উচিত। আলোচনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে ভারতে, বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমাবদ্ধতা বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমাদের নিজেদের ঘর গোছাতে হবে। আবেদনকারীদের উচিত সঠিক তথ্য ও বৈধ কাগজপত্র প্রদান করা। অতীতে এক ব্যক্তির নামে একাধিক পাসপোর্ট থাকার উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন তা কঠিন হয়ে গেছে। ভুল তথ্য দেয়া আমাদের একটি বড় সমস্যা। এই প্রবণতা রোধ করতে পারলে অনেক সমস্যাই ধীরে ধীরে সমাধান হয়ে যাবে।
ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় ভারত থেকে আসা চিকিৎসক দলের উপস্থিতিকে কীভাবে দেখা হচ্ছে- এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সবসময় পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পারস্পরিকতার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে কাজ করার সম্পর্ক চেয়েছে। আমরা বরাবরই চেয়েছি, প্রথম দিন থেকেই বলে আসছি, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পারস্পরিকতার ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে কাজ করার সম্পর্ক চাই। আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।
উল্লেখ্য, দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দিতে ভারতের বার্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সদের একটি টিম বুধবার (২৩ জুলাই) রাতে ঢাকায় এসেছে।