জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত
সংসদের উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসনের, সদস্য নির্বাচিত হবেন পিআর পদ্ধতিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৯:০২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদের ১০০ সদস্যের উচ্চকক্ষের সদস্যরা ভোটের শতাংশের ভিত্তিতে (পিআর) নির্বাচিত হবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি সমমনা দলের বিরোধিতার মধ্যেও এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিন বিকালে নগরীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় দফা সংলাপের ২৩তম অধিবেশনে (শেষ দিন) এই সিদ্ধান্তের কথা জানান কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, উচ্চকক্ষের নিজস্ব কোনো আইন প্রণয়নের ক্ষমতা থাকবে না। তবে অর্থবিল ছাড়া অন্যান্য সমস্ত বিল নিম্নকক্ষ এবং উচ্চকক্ষে উত্থাপন করতে হবে। উচ্চকক্ষকে কোনো বিল স্থায়ীভাবে মুলতবি রাখার ক্ষমতা থাকবে না। যদি কোনো বিল এক মাসের বেশি সময় ধরে মুলতবি থাকে—তবে তা উচ্চকক্ষে অনুমোদিত বলে ধরে নেয়া হবে।
নিম্নকক্ষে পাস হওয়া বিলগুলো পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করবে উচ্চকক্ষ এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলো অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যান করতে পারবে। বিলটি অনুমোদিত হলে এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে সম্মতির জন্য পাঠানো হবে। আর যদি প্রত্যাখ্যান হয়—তাহলে উচ্চকক্ষের সুপারিশকৃত সংশোধনীসহ এটি নিম্নকক্ষে ফেরত পাঠাবে। পরে নিম্নকক্ষ সেটির সম্পূর্ণ, আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করতে পারে।
উচ্চকক্ষের জন্য কমপক্ষে ১০ শতাংশ নারী প্রার্থীর নাম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি ঘোষণা করা হবে। এদিন মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে বিএনপি, লেবার পার্টি, এনডিএম, ১২-দলীয় জোট এবং জাতীয়তাবাদী জোট পিআর পদ্ধতির অধীনে উচ্চকক্ষের বিরোধিতা করেছিল।
বিরতির পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ১০০ জন উচ্চকক্ষ সদস্য নির্বাচনের প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি দল এবং জোট পিআর পদ্ধতির এবং উচ্চকক্ষের প্রস্তাবিত ক্ষমতা উভয়ের সঙ্গেই একমত হয়নি। আমাদের ভিন্নমত আনুষ্ঠানিকভাবে রেকর্ড না করা পর্যন্ত আমরা এটিকে সমর্থন করব না।’
সিপিবি, বাসদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এবং আম জনতা দলসহ কিছু বামপন্থী ও ইসলামপন্থী দল বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতার কথা উল্লেখ করে উচ্চকক্ষ গঠনের ধারণারই বিরোধিতা করেছিল। কয়েক দিন ধরে দীর্ঘ আলোচনা সত্ত্বেও দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্যের কারণে উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়টি কমিশনের উপর ন্যস্ত করা হয়েছিল। কমিশন এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।