×

জাতীয়

সংশয় রেখেই ভোটের প্রস্তুতি: সংস্কার, সনদ ও পিআর নিয়ে দোলাচল

Icon

হরলাল রায় সাগর

প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৫, ০৮:২৭ পিএম

সংশয় রেখেই ভোটের প্রস্তুতি: সংস্কার, সনদ ও পিআর নিয়ে দোলাচল

ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়ার পর নির্বাচন কমিশন তোড়জোড় শুরু করেছে। তারপরও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনিশ্চয়তা কাটছে না। সংস্কার কার্যক্রম, বিচার ও জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে দোলাচলে রয়েছে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো। আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর), নাকি আসনভিত্তিক নির্বাচন। বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন চাইছে। জুলাই সনদ ও সংস্কার প্রশ্নে মতভেদ রয়েছে; বিএনপি বলছে নির্বাচিত সরকার সংস্কার করবে। আর কারো সংস্কার করার এখতিয়ার নেই। নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতেও নয়। বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ তাদের সমমনা সংগঠনগুলো সরকার যে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনেই রাজি নয়; ফেব্রুয়ারিতে তো নয়ই। 

পাশাপাশি জুলাই সনদ নিয়েও তাদের আপত্তি রয়েছে। এই সনদে তাদের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি বলে দাবি করছে। একই সঙ্গে পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন না করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকারকে। স্রেফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে, পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন নয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোই এখন পর্যন্ত অমীমাংসিত। তবে এই অনিশ্চয়তার মধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তোড়জোড় শুরু করলেও অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী রোডম্যাপই তৈরি করতে পারেনি সংস্থাটি। ৮৩টি আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানা নিয়ে আপত্তির সুরাহা হয়নি। ভোটকেন্দ্র নিয়ে রয়েছে জটিলতা। অথচ হাতে সময় আর মাত্র ৫ মাস। এছাড়া, দেশে এখনো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরেনি। বরং নতুন নতুন ইস্যু তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও যথেষ্ট অনুক‚ল নয়। অপরাধ নিয়ন্ত্রণহীন। মবের তাণ্ডব এখনো সামাল দেয়া যায়নি। পুলিশের মনোবল ফেরেনি। প্রশাসনেও রয়েছে নানা অস্থিরতা।  

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেয়। এজন্য একাধিক কমিটিও গঠন করা হয়। সরকার বলছে, জুলাই অভ্যুত্থানে জাতির আকাক্সক্ষা পূরণে প্রয়োজনীয় সংস্কার করার পর নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে। তবে অনেক উদ্যোগ নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারেনি সরকার। এই অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের এখতিয়ার নেই বলে বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বলে আসছে। কিন্তু গোটা দেশে চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হলে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলে। সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের একাধিক সভায় অংশ নিয়ে এবং নির্বাচন কমিশনের বৈঠকেও এই দাবি জানানো হয়।

২০২৬ সালের রমজানের আগে না পরে নির্বাচন, তা নিয়েও তুমুল কাণ্ড ঘটেছে। এরপর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ছুটে যান লন্ডনে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। দেশে ফিরে তিনি ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জানান। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলেও জানিয়ে আসছেন তিনি। সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। 

তিনি আরো বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাব, যেন নির্বাচন কমিশন আগামী রমজানের আগে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে।’ এরপর প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে ইসিকে চিঠিও দেয়া হয়। তোড়জোড় শুরু করে নির্বাচন কমিশন। এতে রাজনৈতিক অঙ্গনে ইতিবাচক ধারা ও স্থিতিশীলতা চলে আসে। কিন্তু বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনসহ ইসলামী দলগুলো একাট্টা হয়ে এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই হত্যাকারীদের বিচার, সংস্কার বাস্তবায়ন ও জুলাই সনদ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিরোধিতা শুরু করে।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী গত ১২ আগস্ট রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ডেট ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে সংস্কার ও নতুন সংবিধানের জন্য যারা শহীদ হয়েছিল, তাদের জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে সরকারকে। সংস্কার এবং নতুন সংবিধান ছাড়া নির্বাচন হলে মায়ের বুকে সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে হবে। একই সিস্টেমের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে গেলে এতগুলো মানুষের শহীদ হওয়ার প্রয়োজন ছিল না। গণভবনের মতো বঙ্গভবনের পতনও তরুণদের হাত ধরেই ঘটবে বলেও হুঁশিয়ারি করেন ওই নেতা। 

এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি ইসির সঙ্গে বৈঠক করে জামায়াতে ইসলামী সাফ জানিয়ে দেয়, সংস্কার ছাড়া জাতীয় নির্বাচন নয়। গত ১৫ আগস্ট কুমিল্লায় এক অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচন ঘোষণার নিন্দা জানান। গত ১৭ আগস্ট রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেছেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি ছাড়া কখনোই স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব নয়। যারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না, তারাই নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। তারা যেনতেন একটি নির্বাচন দিয়ে পুরনো ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনতে চায়। 

রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্যের ডাক দেন এই জামায়াত নেতা। বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ তাহের বলেন, জাতি আজ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আসুন আমরা সংলাপে বসি। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকেও সব দলকে নিয়ে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানান। এই জামায়াত নেতার বক্তব্যেই ফুটে ওঠে বিএনপিসহ একটি পক্ষের সঙ্গে বৈরিতা ও রাজনৈতিক সংকটের চিত্র।

এর আগে ২৮ জুন সোহরাওয়ার্দীতে মহাসমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশের মানুষ পিআর ব্যবস্থার পক্ষে রায় দিয়েছে। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।

গত ১৬ আগস্ট নড়াইলে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির উদ্দেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, কোনো দল পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চায় না চায়, আগামী সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে, ইনশাল্লাহ। দেশের জনগণ পিআর পদ্ধতি গ্রহণ করবেন। নির্বাচনের প্রার্থী হবে দল, ব্যক্তি নয়।

পিআর পদ্ধতিতে ভোটের বিরোধিতা করে আসছে এই সময়ে মাঠের বড় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। শীর্ষ নেতারা বলছেন, পিআর পদ্ধতি নির্বাচনের জন্য সঠিক উপায় নয়। যারা পিআর পদ্ধতিতে ভোটের দাবি করছে, তারাও জানে না এটা কী জিনিস। তাদের উদ্দেশ্যও সন্দেহজনক। জনগণও জানে না পিআর পদ্ধতি কী। গত ১৮ আগস্ট রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী পিআর পদ্ধতির বিরোধিতা করে বলেছেন, জনগণ এ ধরনের নির্বাচনী পদ্ধতির জন্য প্রস্তুত নয়। বাংলাদেশের জন্য পিআর পদ্ধতি উপযোগী নয়। যারা পিআর দাবি করে তাদের উদ্দেশ্য নিয়েই সন্দেহ থেকে যায়।

জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়ার সূচনা ও ২, ৩, ৪ দফা নিয়ে বিএনপির আপত্তির কথা জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সংবাদিকদের তিনি বলেছেন, জুলাই সনদের সূচনায় অসত্য তথ্য দেয়া হয়েছে। কিছু কিছু বিষয় আলোচনা না হলেও তা জুলাই সনদে রাখা হয়েছে। এছাড়া কিছু বিষয়ে সঠিকভাবে উপস্থাপন হয়নি। সবকিছু পর্যালোচনা করে কমিশনে মতামত পাঠাবে বিএনপি। আগামী সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে সংবিধানসংক্রান্ত সংশোধনী পাস করার কথা বলা হলেও চূড়ান্ত খসড়ায় তা নেই। তাছাড়া জুলাই সনদে উত্থাপিত ৮৪ দফার মধ্যে অনেক বিষয়ই অমীমাংসিত। 

একই সঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন। কমিশনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা খুব দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করেছেন। এটা নিয়ে আমাদের কোনো সংশয় নেই। যারা নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা মাঠের বক্তৃতায় বলছেন, তারা হয়তো নির্বাচনী কৌশল হিসেবে বিভিন্ন পক্ষকে চাপে রাখার জন্য বলতে পারেন। এটা তাদের বক্তব্য। তবে এসব বিষয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই রাজতৈনিক দলগুলো ও সরকারকে মীমাংসায় যেতে হবে বলে মনে করছে বোদ্ধা মহল।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে মৌলিক ১৯ সংস্কার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং ৯টিতে ভিন্নমত রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে আছে গুরুত্বপূর্ণ চারটি প্রতিষ্ঠানে বাছাই কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া ও সংসদের উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্য না হওয়া। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বিএনপি ও তাদের জোট, কিছু বাম সংগঠন, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় (জুলাই) সনদ-২০২৫ (জুলাই সনদ) নিয়েও দলগুলোর মধ্যে রয়েছে মতবিরোধ। গত শনিবার ৮৪ দফা সম্বলিত ‘জাতীয় (জুলাই) সনদ-২০২৫’ এবং তার বাস্তবায়নে ৮ অঙ্গীকারনামাসহ সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এই খসড়ার বিষয়ে মতামত আজ বুধবার বিকাল ৪টার মধ্যে কমিশনের কার্যালয়ে জমা দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। 

ডান ও ধর্মীয় ঘরানার দুটি শক্তিশালী রাজনৈতিক পক্ষ বিপরীত মেরুতে অবস্থান নেয়ায় ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ওয়াকিবহাল মহল। এই সময়ে নির্বাচন না হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে জনসাধারণের মাঝেও। তাদরে প্রশ্ন, নির্বাচন কি ফেব্রুয়ারিতে হচ্ছে, নাকি হচ্ছে না? তারা বলছেন, সরকার যতই তোড়জোড় করুক না কেন, শেষ মুহূর্তে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না। কারণ এই অল্প সময়ে সংস্কার ও বিচার শেষ করা সম্ভব নয়। নির্বাচনে যাওয়া সম্ভাব্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সুরাহাও হয়নি। 

এমনকি যে সময় রয়েছে এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থাপনার আয়োজন করাও দুষ্কর। এই সংশয় আরো বাড়িয়ে দিয়েছে গত ১৩ আগস্ট মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেল নিউজ এশিয়া (সিএনএ) টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকার ঘিরে। সেখানে তিনি বলেছেন, অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে বাংলাদেশে আবার পুরনো সমস্যাগুলো ফিরে আসবে। আমাদের অঙ্গীকার ছিল অভ্যুত্থানের সময় জাতির যে আকাঙ্ক্ষা, তা নিশ্চিত করা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এ সরকারের লক্ষ্য।

সরকারের নির্দেশনায় ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশনও তোড়জোড় শুরু করেছে। তবে নির্বাচনী কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি নির্বাচন কমিশিন (ইসি)। সংস্থাটির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সোমবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনের রোডম্যাপের খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। কমিশনের অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। কর্মপরিকল্পনা মূলত আন্তঃঅনুবিভাগীয় এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সবকিছু সমন্বয়ের পর এ সপ্তাহেই চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশ করা সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি।

সরকারের উপদেষ্টারা বিভিন্ন সভা-অনুষ্ঠানে বলে আসছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারিতেই হবে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে এ লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা একজন বিশ্বনন্দিত মানুষ। তিনি নিজে ঘোষণা করেছেন, তার এ ঘোষণা থেকে আমাদের পিছিয়ে আসার বিন্দুমাত্র চিন্তা নেই। 

এর আগে ১৫ আগস্ট এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। যারা সন্দেহের বীজ রোপণ করছেন, তাদের বলব, আপনারা থামেন। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হবে এবং রোজা শুরু হওয়ার আগেই হবে। সব জায়গায় সবাই মিলে এখন পুরো জাতি আসলে অধীর আগ্রহে নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। 

প্রেস সচিব জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি মূল দায়িত্ব হচ্ছে সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রম অগ্রসর হচ্ছে এবং বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান হয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সরকার এখন নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

শিশুদের হাঁপানি সম্পর্কে যা যা জানা জরুরি

শিশুদের হাঁপানি সম্পর্কে যা যা জানা জরুরি

গুঁড়িয়ে দেয়া হলো নসরুল হামিদের অবৈধ বাংলো

গুঁড়িয়ে দেয়া হলো নসরুল হামিদের অবৈধ বাংলো

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন মির্জা ফখরুল

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন মির্জা ফখরুল

শিবির প্যানেল থেকে যেভাবে জয়ী হতে চায় রায়হান-সালমা দম্পতি

শিবির প্যানেল থেকে যেভাবে জয়ী হতে চায় রায়হান-সালমা দম্পতি

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App