জাতীয় নির্বাচন: শিগগিরই নির্বাচনী এলাকার চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৭ পিএম
-68af368bee0d9.jpg)
বুধবার রাজধানীর ইসি ভবনে ব্রিফিং করেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে শিগগিরই সংসদীয় আসনের চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রাজধানীর ইসি ভবনে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান। সংসদীয় আসনের সীমানা ও পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত দাবি ও আপত্তির ওপর চার দিনের শুনানি শেষে এ ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
আখতার আহমেদ বলেন, এখন আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চূড়ান্ত তালিকা (নির্বাচনী এলাকার) নিয়ে আলোচনা করব এবং প্রকাশ করব। ৩৩টি জেলার ৮৪টি আসনের দাবি, অভিযোগ এবং সুপারিশের ওপর শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। ইসি এর আগে ৮৪টি আসনের বিষয়ে মোট ১ হাজার ৮৯৩টি দাবি, অভিযোগ, আপিল এবং সুপারিশ পায়। এর মধ্যে ইসির খসড়া নির্বাচনী এলাকা সীমানা নির্ধারণের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১৮৫টি আবেদন এবং বাকি ৭০৮টি আবেদন ইসির খসড়ার পক্ষে ছিল। ৮৪টি সংসদীয় আসনের বাইরে চূড়ান্ত সীমানা নির্ধারণে কমিশন অন্য কোনো আসনের সীমানায় কোনো পরিবর্তন করবে না।
বিএনপির সাবেক সাংসদ রুমিন ফারহানার মতামত উত্থাপনের আগে শুনানির সময় একজন এনসিপি নেতার ওপর হামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি কাম্য ছিল না এবং এটি হওয়া উচিতও ছিল না। ‘এটি আমাদের জন্য খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত একটি বিষয়। এটি না হওয়াই ভালো ছিল এবং এটি আমাদের সকলের জন্য দুঃখজনক বিষয়। ইসি এই বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে এবং পুলিশকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন ২৪ থেকে ২৭ আগস্ট নগরীর নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত শুনানি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। চার নির্বাচন কমিশনার - আবদুর রহমানেল মাসুদ, তাহমিদা আহমেদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল ফজল মো. সানাউল্লাহ অধিবেশনগুলোতে উপস্থিত ছিলেন এবং ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ শুনানি পরিচালনা করেছেন।
এর আগে ৩০ জুলাই ইসি ৩০০টি আসনের খসড়া সীমানা প্রকাশ করে। যেখানে ১৪টি জেলার ৩৯টি আসনে সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। খসড়া অনুসারে, গাজীপুরে আসনের সংখ্যা পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ছয়টি এবং বাগেরহাটে আসনের সংখ্যা চার থেকে কমিয়ে তিনটি করা হয়েছে।
পুনর্বিন্যাস করা ৩৯টি আসন হলো- পঞ্চগড়-১ ও ২, রংপুর-৩; সিরাজগঞ্জ-১ ও ২; সাতক্ষীরা-৩ ও ৪; শরীয়তপুর-২ ও ৩; ঢাকা-২, ৩, ৭, ১০, ১৪ ও ১৯; গাজীপুর-১, ২, ৩, ৫ ও ৬; নারায়ণগঞ্জ-৩, ৪ ও ৫; সিলেট-১ ও ৩; ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩; কুমিল্লা-১, ২, ১০ ও ১১; নোয়াখালী-১, ২, ৪ ও ৫; চট্টগ্রাম-৭ ও ৮ এবং বাগেরহাট-২ ও ৩।
চার দিনের শুনানিতে গাজীপুরের প্রতিনিধিরা জেলায় সংসদীয় আসনের সংখ্যা পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ছয়টিতে বৃদ্ধির জন্য ইসির উদ্যোগের প্রশংসা করেন। অন্যদিকে বাগেরহাটের প্রতিনিধিরা সাম্প্রতিক খসড়া সীমানা নির্ধারণে সংসদীয় আসনের সংখ্যা চার থেকে কমিয়ে তিনটি করায় ইসির সমালোচনা করেছেন। এছাড়া মানিকগঞ্জ এবং মুন্সীগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলার প্রতিনিধিরা তাদের জেলায় সংসদীয় আসনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
৮৪টি আসনের মধ্যে ঢাকার দোহার, নবাবগঞ্জ, সাভার এবং আশুলিয়া উপজেলাসহ কয়েকটি সংসদীয় আসনের অনেক আবেদনকারী তাদের নিজ নিজ উপজেলাসহ পৃথক সংসদীয় আসন চেয়েছিলেন। কারণ আসনগুলো ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ছিল।
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ১০টি আসন পুনর্বিন্যাস করেছিল। কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ২৫টি আসনের সীমানা পরিবর্তন করেছিল। কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন কমিশন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৮৭টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছিল। এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে নবম সাধারণ নির্বাচনের আগে ১৩৩টি আসনের সীমানায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করেছিল।