×

জাতীয়

জাতীয় নীতি সংলাপে নারী মৎস্যজীবীদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির দাবি

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:১০ পিএম

জাতীয় নীতি সংলাপে নারী মৎস্যজীবীদের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির দাবি

ছবি: সংগৃহীত

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জেলে পরিবারে পুরুষের পাশাপাশি নারীরও কার্ড থাকতে হবে। বর্তমানে সরকারের দেয়া জেলে কার্ডের মাত্র ৪ শতাংশ নারী জেলেদের নামে বরাদ্দ থাকে। অথচ মাছ ধরার কাজে পুরো পরিবারই জড়িত থাকে এবং অনেক ক্ষেত্রে নারীরাই বেশি পরিশ্রম করেন। তাই পুরুষদের পাশাপাশি নারী জেলেদেরও কার্ড প্রদান জরুরি।

সম্প্রতি রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বেসরকারি গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস) ও জাগো নারী’র যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জাতীয় নীতি সংলাপ’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ফরিদা আখতার আরও বলেন, সরকার লিঙ্গ সমতার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও নারী জেলেরা এখনো সম্পদে প্রবেশাধিকার ও স্বীকৃতির ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছেন। এ সমস্যার সমাধানে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় এবং অক্সফাম বাংলাদেশের কারিগরি সহযোগিতায় ‘এমপাওয়ারিং উইমেন থ্রু সিভিল সোসাইটি অ্যাক্টরস (ইডব্লিউসিএসএ)’ প্রকল্পের অধীনে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে নারী মৎস্যজীবীদের অবদানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার দাবি ওঠে। সরকারি কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মৎস্যনীতি প্রণয়নে নারীদের অন্তর্ভুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সংলাপে দুটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় সিএনআরএস-এর ‘নারী মৎস্যজীবীদের ক্ষমতায়ন: লিঙ্গসমতা ও টেকসই মৎস্যের পথনির্দেশ’ এবং জাগো নারী’র ‘ঝুঁকি ও করণীয়: বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে নারী মৎস্যজীবীদের ওপর একটি গবেষণা’। উভয় প্রতিবেদনে নারী মৎস্যজীবীদের স্বীকৃতি ও লিঙ্গসমতাভিত্তিক মৎস্যনীতি প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়।

সিএনআরএস উপদেষ্টা ড. আমিনুল ইসলাম তার উপস্থাপনায় নতুন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সংজ্ঞা প্রস্তাব করেন। তার মতে, যেকোনো নাগরিক, লিঙ্গ নির্বিশেষে, যদি আয়ের অর্ধেকের বেশি বা কর্মঘণ্টার অধিকাংশ সময় মৎস্য খাতে ব্যয় করেন, তবে তিনি মৎস্যজীবী হিসেবে পরিচিত হবেন। এর আওতায় মাছ ধরা, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংগ্রহ ও বিপণনসহ পূর্ণকালীন ও মৌসুমি উভয় ধরনের মৎস্যজীবীকে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব করা হয়।

এছাড়া ফিশারফোক আইডেন্টিটি কার্ড (এফআইডি) প্রদানের ক্ষেত্রে তিন শ্রেণির প্রস্তাব করা হয় ১. প্রতিষ্ঠিত শিল্পসংশ্লিষ্টদের জন্য, ২. নৌকা-ভিত্তিক নিয়মিত জেলেদের জন্য এবং ৩. নারী মৎস্যজীবী ও ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য।

মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ নারী মৎস্যজীবীদের স্বীকৃতির জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, এ খাতে নারীদের অবদান বিপুল হলেও তারা অবমূল্যায়িত এবং প্রায় ৩০ শতাংশ মজুরি বৈষম্যের শিকার। ভূমিহীনতার কারণে নারীরা জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে যে সমস্যায় পড়েন, তার সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তিনি জানান, এফআইডি কার্ড চালু হলে নারীরা সরকারি সহায়তা ও ভর্তুকি পাবেন।

অক্সফাম বাংলাদেশের কোঅর্ডিনেটর শাহাজাদি বেগম বলেন, নারীরা মাছ আহরণ থেকে প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে যুক্ত থাকলেও প্রাপ্য সুফল থেকে বঞ্চিত হন। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, অনেক নারী মাছ বাছাই করতে করতে আঙুলের ছাপ হারিয়ে ফেলেন, ফলে ভোটাধিকার প্রয়োগেও সমস্যায় পড়েন। তিনি ভূমিহীন নারীদের আবেদন প্রক্রিয়া সহজকরণ ও ‘মান্তা’ সম্প্রদায়ের নারীদের নিয়ে বিশেষ জরিপের প্রস্তাব করেন।

অংশগ্রহণকারীরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সমন্বিত মৎস্যনীতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তারা মনে করেন, এ ধরনের পদক্ষেপ পরিবেশ রক্ষা এবং নারী মৎস্যজীবীদের জীবিকা সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড; বিশ্ব গণমাধ্যমে যেভাবে খবর প্রকাশ

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড; বিশ্ব গণমাধ্যমে যেভাবে খবর প্রকাশ

শেখ হাসিনাকে নিয়ে গান গাইলেন যুবক

শেখ হাসিনাকে নিয়ে গান গাইলেন যুবক

সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের হুঁশিয়ারি পুলিশের

সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের হুঁশিয়ারি পুলিশের

পল্লবীতে দোকানে ঢুকে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা

পল্লবীতে দোকানে ঢুকে যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যা

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App