পাকিস্তানের একটি বিমানও ভূপাতিত হয়নি: প্রতিরক্ষামন্ত্রী

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ০৯:২৩ এএম

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ। ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ ‘অপারেশন সিদুঁর’ সময় পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধানের সাম্প্রতিক দাবিকে ‘মিথ্যা, হাস্যকর ও সত্য থেকে বহু দূরের’ বলে অভিহিত করেছেন।
নিজের সরকারি এক্স (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে আসিফ বলেন, তিন মাস আগে সংঘর্ষ শেষ হওয়ার পর হঠাৎ করা এ দাবি যেমন অবিশ্বাস্য, তেমনি অসময়ের।
তিনি ভারতীয় সামরিক নেতৃত্বকে সমালোচনা করে বলেন, তারা এমন এক ‘বড় ধরনের ব্যর্থতার মুখ’ হয়ে উঠেছেন, যা এসেছে ভারতীয় রাজনীতিকদের কৌশলগত স্বল্পদৃষ্টির কারণে।
আসিফ জোর দিয়ে বলেন, পাকিস্তানের একটি বিমানও ভূপাতিত হয়নি বা ধ্বংস হয়নি, বরং পাকিস্তান ছয়টি ভারতীয় জেট, যার মধ্যে রাফাল ফাইটারও ভূপাতিত করেছে।
এছাড়া এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও মানববিহীন বিমান ধ্বংস করেছে এবং কয়েকটি ভারতীয় বিমানঘাঁটিও অকেজো করে দিয়েছে পাকিস্তান।
ভারতের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে আসিফ বলেন, দুই দেশের যুদ্ধবিমানের তালিকা স্বাধীনভাবে যাচাইয়ের সুযোগ দেওয়া হোক।
তিনি দাবি করেন, এতে প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে। অপারেশন শেষে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে প্রযুক্তিগত ব্রিফিং দিয়েছে, যা স্বাধীন পর্যবেক্ষক ও বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার মূল্যায়নের মাধ্যমে সমর্থিত ছিল—এবং সেখানে ভারতীয় ক্ষতির বিষয়টি স্বীকৃত হয়েছে।
পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, রাজনৈতিক লাভের জন্য তৈরি ‘হাস্যকর বয়ান’ দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক পরিবেশে গুরুতর ভুল অনুমানের ঝুঁকি বাড়ায়।
আরো পড়ুন : ভারতকে চটিয়ে কেন ক্রমশ পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকছেন ট্রাম্প?
তিনি বলেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তার সার্বভৌমত্বে যে কোনো লঙ্ঘনের জবাব দ্রুত ও যথোপযুক্তভাবে দেবে—যেমনটি ‘অপারেশন বুনিয়ানুন মারসুস’-এ দেখা গেছে।
আসিফ বলেন, ‘মিথ্যার মাধ্যমে যুদ্ধ জেতা যায় না, জেতা যায় নৈতিক কর্তৃত্ব, জাতীয় সংকল্প ও পেশাদার দক্ষতার মাধ্যমে’। ভবিষ্যতে কোনো উত্তেজনা বৃদ্ধি হলে তার দায়ভার পড়বে ভারতের ‘কৌশলগতভাবে অন্ধ নেতাদের’ ওপর।
এর আগে শনিবার ভারতের বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ.পি. সিং দাবি করেন, মে মাসের সংঘর্ষে ভারত পাকিস্তানের পাঁচটি ফাইটার জেট এবং একটি অন্য সামরিক বিমান ভূপাতিত করেছে। কয়েক দশকের মধ্যে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক সংঘর্ষের পর এটাই ভারতের প্রথম আনুষ্ঠানিক দাবি।
দক্ষিণ ভারতের বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানে সিং বলেন, পাকিস্তানের বেশিরভাগ বিমান ভারতের রাশিয়া-নির্মিত এস-৪০০ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেম দিয়ে নামানো হয়।
তিনি জানান, অন্তত পাঁচটি ফাইটার ও একটি বড় বিমান ধ্বংসের নিশ্চিত তথ্য রয়েছে, যার মধ্যে বড় বিমানটি নজরদারি বিমানের সম্ভাবনা রয়েছে এবং সেটি ৩০০ কিলোমিটার দূরে ভূপাতিত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা, প্রবীণ যোদ্ধারা এবং সরকারি ও শিল্প কর্মকর্তারা এ দাবিতে করতালি দেন।
পাকিস্তানি বিমানবাহিনী মূলত চীন-নির্মিত জেট ও মার্কিন এফ-১৬ পরিচালনা করে। ইসলামাবাদ আগে থেকেই দিল্লির দাবি অস্বীকার করে আসছে। পাকিস্তান জোর দিয়ে বলছে, মে ৭-১০ তারিখের সংঘর্ষে ভারত কোনো পাকিস্তানি বিমান ভূপাতিত করতে পারেনি।