অস্ট্রিয়াকে হারিয়ে বিশ্বজয় পর্তুগালের
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
দোহায় মঙ্গলবার রাতেই ইতিহাস লিখল পর্তুগাল। কাতারের খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অস্ট্রিয়াকে ১–০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফিফা অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে নিল তারা। ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে প্রথমার্ধে আনিসিও কাবরালের পা থেকে। ইউরোপের পর এবার বিশ্বের মঞ্চেও জয়—২০২৫ সাল যেন পর্তুগালের এই যুব দলটির স্বপ্নপূরণের বছর হয়ে উঠল।
শিরোপা জয়ের পর পর্তুগালের কিংবদন্তি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ইনস্টাগ্রামে দলকে অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন, “জায়ান্টস! অভিনন্দন, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন!”
অস্ট্রিয়া, যারা দেশের ইতিহাসে প্রথমবার কোনও বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলছিল, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করেছে। ড্যানিয়েল ফ্রাউশারের শট পোস্টে লেগে ফিরে না এলে ম্যাচটি অন্য গল্পও লিখতে পারত।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল পর্তুগাল। দুয়ার্তে কুনহার শট অল্পের জন্য বাইরে গেলে অস্ট্রিয়া দ্রুত পাল্টা–আক্রমণে ওঠে। সেই মুহূর্তে হাসান দেশিসকুর শট দারুণভাবে ঠেকান গোলকিপার রোমারিও কুনহা। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের প্রথম গলোতী করেন কাবরালই। কাছ থেকে করা গোলটি ছিল টুর্নামেন্টে তার সপ্তম গোল। অস্ট্রিয়ার জোহানেস মোসারই কেবল তার চেয়ে এগিয়ে (৮ গোল), যিনি পেয়েছেন গোল্ডেন বুট।
পিছিয়ে পড়েও দমে যায়নি অস্ট্রিয়া। দ্বিতীয়ার্ধে দেশিসকু ফ্রি–কিক থেকে গোলের কাছাকাছি গেলেও আবারও বাধা হয়ে দাঁড়ান কুনহা। এছাড়া ইফেয়ানই নডুকুয়ের হেডও দুর্দান্ত সেভে বার ঘিরে দেন তিনি। ৮৫তম মিনিটে ফ্রাউশারের শট পোস্টে না লাগলে পর্তুগালের অপেক্ষা আরও কঠিন হতো। শটটি ফিরতেই যেন স্বস্তির ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে পর্তুগিজ খেলোয়াড়দের মধ্যে। শেষ মুহূর্তে অস্ট্রিয়ার চাপ সামলে তারা তুলে নেয় দেশের ইতিহাসের প্রথম অনূর্ধ্ব–১৭ বিশ্বকাপ।
গত ৩৪ বছরে পর্তুগাল উপহার দিয়েছে বিশ্বের অসংখ্য তারকা। তবে মাতেয়ুস মিদে, আনিসিও কাবরাল, মৌরো ফুর্তাদোদের এই প্রজন্ম যা করল, তা কেউ পারেনি। ১৯৮৯ ও ১৯৯১ সালে অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর এত বছর ধরে অপেক্ষা করা সেই ‘বিশ্বচূড়ায়’ ফেরার মুহূর্তটি এবার বাস্তব হলো। এই বছরই ইউরোপের অনূর্ধ্ব–১৭ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর দোহায় জিতে তারা করল বিশ্বজয়। অ্যাডিডাস গোল্ডেন গ্লাভ জেতা গোলকিপার রোমারিও কুনহা বলেন, “এটা এক স্বপ্নের বছর। ফাইনালের আগে কেউ আমাকে বলেছিল—আজ জীবনের অন্যতম আনন্দের দিন হবে। সত্যি বলতে, স্বপ্নেও ভাবিনি আমরা বিশ্বকাপ জিতব। অনুভূতিটা অসাধারণ।”
এই স্বপ্নের যাত্রা শুরু হয়েছিল এ বছরের মে মাসে আলবেনিয়ায়, যখন কোচ বিনোর পরিশীলিত দলটি ইউরোপের মঞ্চে শিরোপা জিতে বিশ্বকাপের টিকিট কাটে। ২২ বছর পর অনূর্ধ্ব–১৭ বিশ্বকাপে ফেরা দলের সেই অভিজ্ঞতাই তাদের দোহায় সাহায্য করেছে বলে মনে করেন অনেকে। অ্যাডিডাস গোল্ডেন বলজয়ী মাতেয়ুস মিদে বলেন, “আমার হৃদয় আনন্দে ভরে গেছে। কীভাবে অনুভূতি বোঝাবো, জানি না। আমার পরিবারও একই অনুভূতি পাচ্ছে। এ বছর আমার জীবনের সেরা বছর হয়ে থাকবে।”
