পার্বত্য অঞ্চলে রবির ৫১টি মোবাইল টাওয়ারে নাশকতা!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ০৪:১২ এএম

রবির মোবাইল টাওয়ার। ছবি: ভোরের কাগজ
পার্বত্য চট্টগ্রামে মোবাইল নেটওয়ার্কে ভয়াবহ নাশকতা অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ তথ্যমতে, সোমবার চট্টগ্রামের রাউজান ও খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা এলাকায় রবির মোবাইল টাওয়ার (বিটিএস) সাইটে সন্ত্রাসীরা আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। একইসাথে আরও কয়েকটি সাইটে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসব হামলায় রবির প্রায় ৫ কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরেই পার্বত্য তিন জেলায় খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান রবির অন্তত ৫১টি মোবাইল টাওয়ার বিভিন্নভাবে নাশকতার শিকার হয়েছে। কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, কোথাও ফাইবার অপটিক কাটা হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে টাওয়ারের নিরাপত্তাকর্মী ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ারদের অপহরণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে অপরিচিত নম্বর থেকে নিয়মিতভাবে রবির কর্মকর্তাদের নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
রাউজান ও মাটিরাঙ্গার সাম্প্রতিক আগুন লাগানোর ঘটনায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ারগুলো সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে, যার ফলে স্থানীয় এলাকাগুলোতে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে কাজ করছে। তবে এখনও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রবি কর্তৃপক্ষ। সন্ত্রাসীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। চলমান এসব হামলার পেছনে চাঁদাবাজ চক্রের হাত রয়েছে। এর আগে একই ধরনের হামলায় খাগড়াছড়ি জেলায় রবির ৩২টি টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যার মধ্যে এখনো কয়েকটি সাইট বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া, ইডটকো বাংলাদেশ লিমিটেড, যাদের দায়িত্ব মোবাইল টাওয়ারের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষণের, তারা যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে। একাধিকবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় কিছু টাওয়ার পুনরুদ্ধার করা হলেও, পরবর্তীতে সেগুলোর ওপর আবারও হামলা হয়েছে।
রবি বলছে, এই পরিস্থিতিতে গ্রাহক সেবা চরম সংকটে পড়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সাধারণ যোগাযোগে প্রভাব পড়ছে। দুর্গম এলাকার মানুষ চিকিৎসা, ওষুধ ও খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহেও হিমশিম খাচ্ছে।
রবি কর্তৃপক্ষ দ্রুত মোবাইল টাওয়ারগুলোর সেবা পুনঃস্থাপন ও সাইটগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিটিআরসির সহযোগিতা কামনা করেছে।