‘শক্তি’ ও ‘মন্থার’ পর আসছে শক্তিশালী ‘সেনিয়ার’, সেগুলো কতটা আতঙ্কের

দুরুল হক
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হচ্ছে টানা বৃষ্টিপাত। ইতোমধ্যে শঙ্কা জেগেছে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরে তিনটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির। সেগুলো হলো ‘শক্তি’, ‘মন্থার’ ও ‘সেনিয়ার’। এরইমধ্যে এসব নিয়ে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সবারই একই প্রশ্ন এগুলো কতটা ভয়ংকর হবে? ঘূর্ণিঝড়গুলো নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণই বা কতটা?
সাইক্লোন ‘শক্তি’র নাম প্রস্তাব করেছে শ্রীলঙ্কা। এটি মূলত বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে। সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড় ২৭ থেকে ৩০ মে’র মধ্যে ভারতের আসাম, মেঘালয়, উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী উপকূল এবং বাংলাদেশের খুলনা ও চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
এমনটি হলে রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে রেকর্ড পরিমাণ বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হবে। অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। প্রায় একই সময় আরব সাগরেও আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেটি হলো মন্থা। যার নাম দিয়েছে থাইল্যান্ড।
আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড় আগে শেষ হলে বঙ্গোপসাগরের ঝড়টি তুলনামূলক বেশি শক্তিশালী হতে পারে। তেমনটি হলে সারাদেশে ভারী বৃষ্টিপাত হবে।
ফলে বন্যা, ভূমিধস ও শহরাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে কৃষিকাজ ও জনজীবনে প্রভাব ফেলতে পারে। এরপর আসবে ‘সেনিয়ার’। এটিও আরব সাগরে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ‘শক্তি’ ভয়ংকর হলে সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড় তুলনামূলক দুর্বল হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় বাস্তবে রূপ নেবেই-এমন ধারণা করা এখনই ঠিক হবে না। কারণ, ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ এবং প্রকৃত গঠন সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। ২০০০ সালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার উদ্যোগে আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরের পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ, ভারতসহ ১৩ দেশ মিলে ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা করে। যাতে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে সহজে চিহ্নিত করা যায়, সচেতনতা ছড়ানো যায় এবং ইতিহাসে নথিভুক্ত রাখা যায়।
বিভিন্ন আবহাওয়া মডেল মাঝেমধ্যে সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা দেখিয়ে থাকে। তবে এগুলো গাণিতিক হিসাবভিত্তিক পূর্বাভাস মাত্র। প্রকৃতপক্ষে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে কিনা—তা নির্ভর করে সাগরের জলতাপমাত্রা, বায়ুপ্রবাহ, নিম্নচাপের অবস্থা ইত্যাদির ওপর। মডেল প্রতিনিয়ত আপডেট হয়। ফলে একদিন যা দেখায়, পরদিন তা বাতিলও হতে পারে।