জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের জুলাই সনদ ও নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি নিয়ে চলমান আন্দোলনের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, রাষ্ট্র কোনো ছেলে খেলা নয়, জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া যায় না।

শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে গণতান্ত্রিক উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কোনো বৈধ ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ছাড়া সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার কারও নেই। তিনি সতর্ক করে বলেন, একবার নজির তৈরি হলে ভবিষ্যতে বারবার একই দাবি উঠবে, যা রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার জন্য বিপজ্জনক।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা বলেছি, নির্বাচনের দিনে একই সঙ্গে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় নেওয়া যেতে পারে। যদি জনগণ ‘হ্যাঁ’ বলেন, তাহলে নতুন সংসদ সদস্যরা আইনানুগভাবে বাধ্য থাকবেন সেই সনদ বাস্তবায়নে। কিন্তু সাংবিধানিক প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে এখনই ঘোষণা জারির দাবি অবৈধ। সংবিধান তো কোনো কচুপাতার পানি নয়, যা খুশি পরিবর্তন করা যায়।

আরো পড়ুন : এ মাসেই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা

সালাউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের জন্মলগ্নে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং গণপরিষদের গঠন বৈধ সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হয়েছিল। এরপর থেকেই বাংলাদেশ সেই ধারা অনুসরণ করে এসেছে।

বর্তমান আন্দোলনে শরিক কিছু দলকে উদ্দেশ্য করে সালাহউদ্দিন বলেন, যে কয়টা দল নিয়ে আপনারা মাঠে বক্তব্য দিচ্ছেন, তাদের ভূমিকা কী ছিল ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে? আপনাদের সঙ্গী একটি দল ওই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। তাহলে তারা কীভাবে এখন আন্দোলনের শরিক হয়?

সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, গত ১৬ বছরে যারা আওয়ামী লীগের সব কর্মকাণ্ডে বাতাস দিয়েছে, তারাই এখন আন্দোলনে নামছে। এতে জনগণ বিভ্রান্ত হবে না। তিনি আহ্বান জানান, ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রেখে শক্তি সঞ্চয় করে স্বৈরাচারী শক্তিকে নির্বাসনে পাঠানোর।

তিনি বলেন, যে রাজনৈতিক দলগুলো স্বার্থপর উদ্দেশ্যে জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিচ্ছে, তাদের বলবো জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না। জনগণের স্বার্থই চূড়ান্ত, জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের মালিক।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এনডিপির সভাপতি আবদুল্লাহ আল হারুন। সঞ্চালনা করেন মহাসচিব জামিল আহমেদ। এতে আরো বক্তব্য দেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণ দলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান, ডেমোক্রেটিক লীগের খোকন চন্দ্র দাস, জনতার অধিকার পার্টির তরিকুল ইসলাম, ন্যাপের আবদুল বারেক, এনডিপির আওলাদ হোসেন প্রমুখ।