ভূমিকম্প: জরুরি কাঠামোগত মূল্যায়নের সুপরামর্শ আইইবির
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:০৫ পিএম
ভুমিকম্প: জরুরি কাঠামোগত মূল্যায়নের সুপরামর্শ আইইবির
রাজধানীতে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত বেশ কয়েকটি ভবন পরিদর্শন করে গুরুতর প্রকৌশল ও নির্মাণজনিত ত্রুটি শনাক্ত করেছে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)। প্রতিষ্ঠানটির একটি বিশেষজ্ঞ দল রবিবার (২৩ নভেম্বর) স্বামীবাগ, সূত্রাপুর ও দনিয়ার বিভিন্ন ভবন সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রাথমিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে।
আইইবির ভাইস–প্রেসিডেন্ট (সার্ভিসেস অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার) প্রকৌশলী নিয়াজ উদ্দিন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে গঠিত এই দলে সিভিল, স্ট্রাকচারাল এবং জিওটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। দলটি স্বামীবাগের মিতালী স্কুল, সূত্রাপুরের ১০২/১ নম্বর ভবন এবং দনিয়ার বর্ণমালা স্কুলসহ কয়েকটি স্থাপনার স্ট্রাকচারাল ইন্টিগ্রিটি, কলাম–বিমের ক্ষতচিহ্ন, রেট্রোফিটিং প্রয়োজনীয়তা, ফাউন্ডেশনের স্থিতিশীলতা এবং সামগ্রিক নির্মাণমান বিস্তারিতভাবে পর্যবেক্ষণ করে।
পরিদর্শনে ভবনগুলোর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি চিহ্নিত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো যথাযথ স্ট্রাকচারাল ডিজাইনের অভাব, নিম্নমানের বা অপর্যাপ্ত নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার, রেট্রোফিটিংয়ের ঘাটতি, বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) অনুসরণ না করা এবং নির্মাণোত্তর নিয়মিত পর্যবেক্ষণের অভাব। আইইবির মতে, এসব ঘাটতি ভবনের স্থায়িত্ব ও সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করে।
বিশেষজ্ঞ দল জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর প্রকৃত ঝুঁকি নির্ণয়ে জরুরি ভিত্তিতে ডিটেইল্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্ট (ডিইএ) করা প্রয়োজন। এই মূল্যায়নের মাধ্যমেই ভবনগুলো ব্যবহারযোগ্য কি না বা কোন ধরণের সংস্কার প্রয়োজন তা নিশ্চিতভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
আইইবি মনে করে, রাজধানীসহ সারাদেশে ভূমিকম্পঝুঁকি কমাতে বিএনবিসি বাস্তবায়নে কঠোরতা, পুরোনো ভবনের সেফটি অডিট, প্রয়োজনীয় রেট্রোফিটিং এবং নির্মাণ-সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের আরও দক্ষতা উন্নয়ন জরুরি। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, প্রয়োজন হলে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের কাঠামোগত মূল্যায়ন, নিরাপত্তা নির্দেশিকা প্রস্তুত ও কারিগরি পরামর্শ প্রদানে তারা সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে প্রস্তুত।
আইইবি ডেভেলপার, ভবনমালিক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে জানায়, বিএনবিসি অমান্য করে ভবন নির্মাণ বা সংস্কার করা মানেই নাগরিকদের জীবনের ঝুঁকি বাড়ানো। দেশের নগর স্থিতিশীলতা ও মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রকৌশল মানদণ্ড কঠোরভাবে অনুসরণ করা এখন অত্যন্ত জরুরি।
