নোয়াখালীতে চর দখল নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলি, নিহত ৫
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৯ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
নোয়াখালীর হাতিয়ার উপজেলার জাগলার চরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে পাঁচজন নিহত এবং অন্তত ৮ থেকে ১০ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ একজন নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করলেও অন্য চারজনের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে সুখচর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী জাগলার চর গ্রামে এই সংঘর্ষ ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজন হলেন আলাউদ্দিন (৪০), তিনি সুখচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চর আমান উল্যাহ গ্রামের ছেরাং বাড়ির মহিউদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জাগলার চরের জমি এখনও সরকারিভাবে কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। এ সুযোগে গত ৫ আগস্ট জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী চরের কিছু জমি বিক্রি করে। পরে আলাউদ্দিন বাহিনী ওই জমি দখলের চেষ্টা শুরু করে এবং আরো বেশি দামে বিক্রি করতে চায়। এর ফলে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ ও উত্তেজনা তৈরি হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চর দখলে আলাউদ্দিনের সঙ্গে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার ও বিএনপি নেতা নবীর যোগসাজশ রয়েছে। তাদের সহযোগিতায় আলাউদ্দিন বাহিনী কোপা সামছু বাহিনীকে চর থেকে বিতাড়িত করে জমি দখল নিতে চেষ্টা করে।
মঙ্গলবার সকালে সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এতে আলাউদ্দিনসহ চারজন গুরুতর আহত হন। আলাউদ্দিনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর চারজনের মরদেহ ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিল।
বাসিন্দাদের ধারণা, জাগলার চরে সংঘর্ষে তিন বাহিনী—ফরিদ কমান্ডার, শামসু বাহিনী ও আলাউদ্দিন বাহিনী—মুখোমুখি হয়ে গুলি চালিয়েছে। এতে সামসু বাহিনীর প্রধান সামসুদ্দিন এবং আলাউদ্দিন নিহত হয়েছেন, তবে ফরিদ ডাকাত তার বাহিনী নিয়ে পালিয়ে গেছে। সংঘর্ষের সময়ে বাড়িঘরও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সংঘর্ষে লক্ষ লক্ষ টাকা লুটপাট হয়েছে।
হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম জানান, নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে একটি মরদেহ রাখা আছে এবং চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চলের কারণে পুলিশ বিকেল ৪.৩০টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত করা হবে।
