শিবতীর্থ চন্দ্রনাথকে নিয়ে ষড়যন্ত্র
উসকানিমূলক’ কার্যক্রম দেখামাত্র ব্যবস্থার নির্দেশ সরকারের

অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৪০ পিএম

সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড় হিন্দু ধর্মের অন্যতম তীর্থ স্থান। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামে সীতাকুন্ডে হিন্দুদের পবিত্র তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ ধামে মসজিদ নির্মাণের ঘোষণার পর থেকে চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। চন্দ্রনাথ ধামে আরাধ্য দেবতা দেবাদিদেব শিবের পূজার সময় নানা কটূক্তি, ভক্তরা শিবের দর্শনে গেলে পেছন থেকে নানা রকম কু-বাক্য হরহামেশাই চলছে। সবমিলিয়ে এই তীর্থভূমিকে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত চার বছর ধরে এই তীর্থভূমি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সম্প্রতি তীর্থভূমিতে থাকা মন্দিরের পাশে মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা এবং বিরুপাক্ষ মন্দিরে পূজার সময় নারায়ে তাকবীর শ্লোগান ফেসবুকে প্রচার হলে বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে।
মন্দির তদারকের দায়িত্বে নিয়োজিত শ্রাইন কমিটি বলেছে, বুধবার (২৭ আগস্ট) এই বিষয় নিয়ে সরকারের তিন উপদেষ্টা ও প্রেস সচিবের সঙ্গে ঢাকায় রেলভবনে তাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে তারা মন্দিরে প্রবেশাধিকার সংরক্ষণ চেয়েছেন। তাদের মতে, অন্তবর্তী সরকার রাজনৈতিক সরকার নয়, তারা যদি মনে করেন, পবিত্র তীর্থভূমির জন্য এমন পদক্ষেপ নেয়া দরকার তাহলে তারা পারবেন। প্রবেশাধিকার সংরক্ষণ না হলে এই তীর্থভূমি কোনোভাবেই টিকিয়ে রাখা যাবে না বলে মনে করেন তারা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর ভোরের কাগজকে বলেন, চন্দ্রনাথ ধাম ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত তীর্থভূমি। এই তীর্থভূমিকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রের কথা জানা যাচ্ছে। সরকার দ্রুততার সঙ্গে এসব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে না পারলে বাংলাদেশ ভাবমূর্তি সংকটে পড়বে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা এসব ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছি। তবু ফেসবুকে নানারকম কথাবার্তা চলছে এবং তাতে সমস্যা আরো বাড়ছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, হিন্দুদের পবিত্র এই তীর্থভূমির এমন নমুনা দেখে কেউ নীরব, কেউ সরব। ভেতরে ভেতরে এই তীর্থভূমি গিলে খেতে চায় দুবৃর্ত্তরা। মসজিদ তৈরির নামে সাম্প্রদায়িক হামলাও করতে চায় তারা। প্রশাসন এরই মধ্যে দুবৃর্ত্তদের সবরকম পরিকল্পনা জেনে যাওয়ায় তারা বিষয়টির সমাধানের পথে হাঁটছে। কারণ তারা মনে করছে সনাতনীদের এই তীর্থভূমি আন্তর্জাতিকভাবে বিস্তৃত। এ অবস্থায় এই তীর্থভূমির কোনো কিছু হলে দেশের জন্য বড় ক্ষতি ডেকে আনবে। শুধু প্রশাসনই নয়, যারা প্রগতিশীল, মুক্তচিন্তার ধারক তারাও মনে করেন, এই তীর্থের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়। এজন্য তারাও চান পবিত্র ভূমি চন্দ্রনাথ ধাম রক্ষা পাক।
জানতে চাইলে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ভোলানন্দগিরি আশ্রমের অধ্যক্ষ স্বামী উমেশানন্দগিরি মহারাজ ভোরের কাগজকে বলেন, চন্দ্রনাথে খুব বাজে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা কখন কী করে তা যেমন বোঝা মুশকিল তেমনি বলাও মুশকিল। প্রতিদিন তারা এখানে এসে নারায়ে তাকবীর বলে শ্লোগান দিয়ে এমন পরিস্থিতির তৈরি করছে যা ভাষায় বলে বোঝানোর নয়। চন্দ্রনাথ ধাম তদারকের দায়িত্বে নিয়োজিত শ্রাইন কমিটিও আপাতত কিছু বলছে না। তারা সরকারের সঙ্গে বৈঠকের মাধ্যমে পুরো বিষয়টির সমাধান চেয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুবৃর্ত্তদের হাত থেকে এই তীর্থভূমিকে বাঁচাতে এদিন সকালে ঢাকার রেলভবনে চন্দ্রনাথ ধাম (কাঞ্চননাথ-চন্দ্রনাথ-আদিনাথ) শ্রাইন কমিটি সরকারের তিন উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকের পরই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সনাতন ধর্মালম্বীদের তীর্থস্থান চন্দ্রনাথ পাহাড় ঘিরে ‘উসকানিমূলক’ কার্যক্রম দেখামাত্র ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা। তাৎক্ষণিকভাবে তারা এমন নির্দেশনা দিয়ে মাঠ প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সজাগ থাকতে বলেছেন।
বৈঠকের তথ্য জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শ্রাইন কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার এবং ধর্ম উপদেষ্টা আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন।
এর আগে ১৫ আগস্ট এম এম সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী ঢাকা থেকে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। পরদিন তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। হেফাজতে ইসলামের নেতা হারুন ইজহারের সঙ্গে একটি ছবি প্রকাশ করে ওই পোস্টে সাইফুল ইসলাম লেখেন, ‘সীতাকুণ্ড পর্বতের চূড়ায় মসজিদ ৯০ শতাংশ কনফার্ম।’
ফেসবুকে ওই পোস্টটি ছড়িয়ে পড়লে সেখানে কেউ কেউ মসজিদ নির্মাণে আর্থিক সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ নিয়ে ফেসবুকে আলোচনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের মন্দিরের এলাকা ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শ্রাইন কমিটি তখন বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হেফাজতে ইসলামের নেতা হারুন ইজহারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
এরপর ১৭ আগস্ট ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন মুফতি হারুন ইজহার। সেখানে তিনি লেখেন, ঢাকার কিছু তরুণ আলেম উদ্যোক্তা ১৬ আগস্ট আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে আসেন। আমি তখন সফরে বের হচ্ছিলাম, মাত্র কয়েক মিনিট কথা হয় তাদের সঙ্গে। সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় কোনো মসজিদ নির্মাণের অভিপ্রায় তারা ব্যক্ত করেননি। শুধু বলেছেন, পর্যটকদের জন্য উপযুক্ত কোনো জায়গায় একটা মসজিদ দরকার এবং এ বিষয়ে তারা অর্থায়নে আগ্রহী। আমি তাদের এর জন্য সাধুবাদ জানাই। আর আমিও মনে করি ইকোপার্ক অংশে মুসলিম পর্যটকদের সুবিধার জন্য ইবাদাতখানা নির্মাণের জন্য প্রশাসনের সঙ্গে পরামর্শ করে একটা উদ্যোগ নেয়া যায়।
এই আলোচনার মধ্যে গত ১৭ আগস্ট সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা ও শ্রাইন কমিটির নেতারা চন্দ্রনাথ পাহাড় পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞতিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকা পরিদর্শন করে সেখানে মসজিদ নির্মাণের কোনো উদ্যোগের ‘প্রমাণ পাওয়া যায়নি’।
সনাতন ধর্মাবলম্বী সবাইকে আশ্বস্ত করা যাচ্ছে, চন্দ্রনাথ মন্দির এলাকায় মসজিদ নির্মাণের কোনো অনুমতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি। এরপর গত ২৪ আগস্ট চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় এ প্রসঙ্গ ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, সেখানে কোনো প্রকার মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি এবং এ বিষয়ে প্রচারিত সংবাদ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে নতুন করে কোনো মসজিদ নির্মাণের ‘প্রশ্নই ওঠে না’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ধর্ম উপদেষ্টার এ মন্তব্যের তিন দিন পর ঢাকায় বৈঠকে শ্রাইন কমিটির নেতারা বলেছেন, পাঁচ বছর ধরে মন্দির ঘিরে বিভিন্ন ধরনের ‘উসকানিমূলক’ কর্মকাণ্ড দেখা যাচ্ছে। সম্প্রীতির ‘পরিবেশ নষ্টের’ অপচেষ্টা চলছে বলেও দাবি করেছেন তারা। পাশাপাশি পাহাড়ে অবস্থিত মন্দিরে যাতায়াতের জন্য সিঁড়ি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে কমিটির সদস্যরা। শ্রাইন কমিটির নেতারা বলেন, সিঁড়ি এখন খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই। দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
সরকারের দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদীকে ফোন করে সিঁড়ি সংস্কারের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। বৈঠকে উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় বলেন, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি নির্বিশেষে অন্তবর্তী সরকার সবার জন্য বৈষম্যহীন সমাজে নির্মাণে কাজ করছে।
উপদেষ্টা খালিদ হোসেন বলেন, অন্য ধর্মের স্থাপনার ওপর যারা আক্রমণ করে তারা কোনোভাবেই ধার্মিক হতে পারে না। এটা অপরাধ। এ কাজে কোনো ধর্ম নেই, অধর্ম রয়েছে। ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্টের কোনো ধরনের চেষ্টা হলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। আমি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আহ্বান জানাই আপনারা নায্য দাবি-দাওয়াগুলো মন্ত্রণালয়ে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট বরাবর পাঠান, আমরা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।
ফাওজুল কবির খান বলেন, চন্দ্রনাথ মন্দিরের সঙ্গে ইতিহাস, ঐতিহ্য জড়িত। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন কোনো উসকানিমূলক কার্যক্রম বরদাশত করা হবে না। কোনো ধরনের উসকানির চিহ্ন দেখলে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, সনাতন ধর্ম মতে পৌরাণিক স্মৃতিবিজড়িত বেশ কিছু মঠ-মন্দির আছে সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়ে। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে সেখানে শিবচতুর্দশী মেলা হয়। সেখানে প্রায় ১০ লাখ লোকের সমাগম হয় প্রতি বছর। চন্দ্রনাথ পাহাড়ের এই তীর্থ স্থানে শিব মন্দির, চন্দ্রনাথ মন্দির, স্বয়ম্ভুনাথ মন্দির, বীরুপাক্ষ মন্দির, ভোলানাথ গিরি সেবাশ্রম, দোল চত্বর, শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরসহ বিভিন্ন মঠ-মন্দির আছে। ধারণা করা হয়, চন্দ্রনাথ মন্দিরের নির্মাণকাল ৬০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৮০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে।
গত ১৫ আগস্ট এম এম সাইফুল ইসলামের ফেসবুক পোস্টটি পড়ার পর সাংবাদিক আহমাদ ইশতিয়াক তার ফেসবুকে লিখেছেন- ‘চন্দ্রনাথ পাহাড়ে মসজিদ তৈরি তো পরের কথা, ওখানে মসজিদ তৈরির চিন্তাও যে কতটা ভয়ঙ্কর অপতৎপরতা তা খুব সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে। প্রায় ৪ বছর আগে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে আজান দিয়ে অনেকে সেই চেষ্টা চালাতে চেয়েছিল। তখনও মসজিদ তৈরির অপতৎপরতা চলেছিল যদিও তা শেষমেশ থেমেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, চন্দ্রনাথ পাহাড় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থানগুলোর একটি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি শক্তিপীঠের মধ্যে চন্দ্রনাথ পাহাড় অন্যতম। শতশত চন্দ্রনাথ পাহাড়ের শিব মন্দিরে নিয়মিত পূজা-অর্চনা হচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৫১টি শক্তিপীঠের মধ্যে বাংলাদেশে মোট ৭টি শক্তিপীঠ রয়েছে। এগুলো হলো বরিশালের সুগন্ধা, বগুড়ার ভবানীপুর, সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শ্রীশৈল ও কানাইঘাটের জয়ন্তীয়া, চট্টগ্রাম শহরের চট্টেশ্বরী এবং সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড় চূড়া। আর চন্দ্রনাথ পাহাড় যে কেবল একটি শক্তিপীঠ বা মন্দির তাও না।
পৌরাণিক ইতিহাস অনুযায়ী, ওখানে মহামুনি ভার্গব বসবাস করতেন। সত্যযুগে অযোধ্যার রাজা দশরথের পুত্র রামচন্দ্র তার বনবাসের সময় এখানে এসেছিলেন। রাম সীতার বনবাস এর বেশ কিছু চিহ্ন পাওয়া যায় সীতাকুন্ডে। তারা আসবেন জানতে পেরে মহামুনি ভার্গব এখানে স্নানের জন্য তিনটি কুন্ড (কুয়া) সৃষ্টি করেন। এরপর রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতা এই কুন্ডে স্নান করেন। এরপর থেকেই স্থানের নামকরণ করা হয় সীতাকুন্ড। যেটিতে রাম স্নান করেছিলেন সেটির নামকরণ করা হয় রামকুন্ড। রয়েছে লক্ষণ কুন্ড ও রামের ভক্ত হনুমান মন্দির।
পৌরাণিক স্মৃতিবিজড়িত অসংখ্য মঠ-মন্দির আছে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে। এখানে স্বয়ম্ভুনাথ মন্দির রয়েছে। মূলত এই মন্দির দর্শন করে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে আরোহন করতে শুরু তীর্থযাত্রীরা। মোটকথা চন্দ্রনাথ পাহাড়ের প্রতিটি প্রান্তে প্রান্তে, পাহাড়ের খাঁজে, খাঁজে, ভাঁজে, ভাঁজে তীর্থস্থান। চন্দ্রনাথ পাহাড় ও এর ভাঁজে ৭টি মন্দির ও ৬টি ধর্মশালা আছে। তার মানে বোঝাই যায় এই পাহাড় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে কতটা পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ।