আবারও শিশু-কিশোরদের প্রতিভা অন্বেষণের জনপ্রিয় অুনষ্ঠান ‘নতুন কুঁড়ি’ শুরু হচ্ছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাতে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)।

১৯৭৬ সালে মোস্তফা মনোয়ারের প্রযোজনায় বিটিভিতে শুরু হয় শিশু-কিশোরদের রিয়েলিটি শো নতুন কুঁড়ি। এরপর টানা ২০০৬ সাল পর্যন্ত তা সম্প্রচার হয়। এসময়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পায় অনুষ্ঠানটি। নাচ, গান, অভিনয়, আবৃত্তি ও অন্যান্য শিল্পকলার প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তরুণ প্রতিভা খুঁজে বের করেছে নতুন কুঁড়ি। অসংখ্য শিল্পী ও বিনোদন জগতের তারকার ক্যারিয়ার শুরুর মঞ্চ ছিল এটি।

দীর্ঘ ১৯ বছর পর ফের শুরু হচ্ছে নতুন কুঁড়ি। ফলে ভক্ত, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী, সাবেক প্রতিযোগী ও সংস্কৃতিমনা মানুষ-সবাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ স্মৃতিচারণ করেছেন। তবে অডিশন প্রক্রিয়া, সম্প্রচার সূচি বা ফরম্যাটের কোনো পরিবর্তন হবে কিনা-এ সংক্রান্ত কোনো বিস্তারিত তথ্য জানায়নি বিটিভি।

১৯৬৬ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনে (বর্তমান বিটিভি) প্রথম প্রচারিত হয় নতুন কুঁড়ি। স্বাধীনতার পর বিটিভিতে পুনরায় চালু হয় অনুষ্ঠানটি। একপর্যায়ে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয় এটি। দেশের নানা প্রান্ত থেকে তরুণ প্রতিভা আবিষ্কারের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিল নতুন কুঁড়ি। বছরের পর বছর এই অনুষ্ঠান দর্শকদের সামনে হাজির করেছে বহু প্রতিভাবান শিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রী। যারা পরবর্তীতে হয়ে উঠেছেন সবার পরিচিত মুখ।

এদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী তারানা হালিম, রুমানা রশিদ ঈশিতা, তারিন জাহান, মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ইমরোজ তিশা, জাকিয়া বারী মম, তমালিকা কর্মকার, সাবরিন সাকা মীম ও আজাদ রহমান শাকিল, গায়িকা সামিনা চৌধুরী, হেমন্তী রক্ষিত দাস ও মহবুবা মাহনুর চাঁদনীসহ আরও অনেকে। চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, নাট্যাঙ্গন ও সঙ্গীতজগতে এসব শিল্পী নিজের ছাপ রেখেছেন।

২০০৬ সালে বিটিভির আর্থিক সংকট, বেসরকারি চ্যানেলের উত্থান এবং গণমাধ্যম পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণে নতুন কুঁড়ি সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়। দেশব্যাপী অডিশন, সরাসরি সম্প্রচার ও বিচার প্রক্রিয়া টিকিয়ে রাখা সময়ের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। ২০২০ সালে অনুষ্ঠানটি পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনার খবর প্রকাশিত হয়। তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি।