বিএডিসিতে কর্মকর্তা পদায়ন নিয়ে বিতর্ক
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএডিসি) কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে বিতর্ক চলছে। তাদের বদলির আদেশ বহাল রাখা এবং বাতিল নিয়ে চলছে তুঘলকি কাণ্ড। অনেক ক্ষেত্রে যে অস্বচ্ছ ও অনিয়মের মাধ্যমে বদলী আদেশ হয়েছে, ঠিক একই প্রক্রিয়ায় অনেক্ষেত্রে বাতিল আদেশ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন খোদ সংস্থাটির কর্মকর্তারা। এঘটনায় বিএডিসিতে কর্মকর্তাদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তবে এ বিষয়ে সংস্থাটির দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জানা গেছে, বিএডিসিতে ৬ হাজার ৮০০ জনবল অনুমোদন থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছে প্রায় ২ হাজার ৬০০ জন। এ হিসাবে ৪ হাজার ২০০ পদই খালি। এ বিশাল জনবল শূন্যতা ও বিভিন্ন সমস্যা নিয়েই কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে সংস্থাটি। গত অক্টোবর মাসে সংস্থাটির সংস্থাপন বিভাগ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কিছু কর্মকর্তাকে সারাদেশের দপ্তরগুলোতে বদলি করা হয় আলাদা আদেশে। কিন্তু এই বদলি-পদায়নে অস্বচ্ছতা ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে তোলপাড় হয় কৃষি মন্ত্রণালয়ে। ওই সময় বিএডিসির চেয়ারম্যান সরকারি কাজে বিদেশ সফরে থাকায় মন্ত্রণালয়ে বিএডিসির সচিব ও সংস্থাপন শাখা প্রধান জুলফিকারকে তলব করা হয়। কৃষি সচিব তাদের কাছে যোক্তিক ব্যাখা না পেয়ে বিতর্কিত আদেশ বাতিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু যেসমস্ত বদলি আদেশ অস্বচ্ছতা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়, তা বাতিল না করে বহাল রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অন্য দিকে যে সমস্ত আদেশ সংস্থার প্রয়োজনে, যথাযথ প্রক্রিয়ায় শূন্যপদে পদায়ন করা হয়েছে, সেগুলো অদৃশ্য কারণে বাতিল করা হলো। যেমন- সংস্থাটির খামার, কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স ও আলুবীজ বিভাগের মত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে নিয়মিত কর্মকর্তা না থাকায় একজন কর্মকর্তাকে দুই বা ততোধিক দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত করা হয়েছে। জনবল ঘাটতি কারণে অনেক দপ্তরে প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় গুনগত মান সম্পন্ন বীজউৎপাদন দারুনভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এসব দপ্তরের শূন্য অথবা অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে পদায়নকৃত আদেশগুলো বাতিল করা হয়েছে। বিএডিসির সংশ্লিষ্ট অনেক কর্মকর্তার অভিযোগ, কোনো একটি বিশেষ পক্ষ স্বার্থের বিনিময়ে সঠিক বিষয়টি কৃষি সচিবের কাছে গোপন রেখেছ এবং তাকে ভুল বুঝিয়ে অস্বচ্ছ ও বির্তকিত আদেশগুলো বহাল রেখেছে।
এক্ষেত্রেও ওই পক্ষটি তাদের অস্বচ্ছতার প্রমাণ রেখেছে। গত অক্টোবর মাসে যত বদলির অর্ডার হয়েছে, তার সবগুলো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। আবার যেসব আদেশ বাতিল করা হয়েছে, তাও ওয়েবসাইটে দেয়া হয়নি। বাতিলের তালিকায় থাকা ২৭২৩, ২৭৪২, ২৭৪৩, ২৭৪৪, ২৭৮৯, ২৮৭৩, ২৯৯৪, ২৯৪৪, ২৯১৮, ২৯১৯, ২৯৫৭, ২৯৪৬, ২৯১৭, ২৯৬৭ নম্বর স্মারক ওয়েব সাইটে নাই। অপরদিকে বদলি বাতিল করেনি, কিন্তু ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে-২৭৮১, ২৭২১, ২৭৭৫, ২৭৪৭, ২৭৮২, ২৭৫৫, ২৮৫৮, ২৮৩৩, ২৮৪৮, ২৮৪৯, ২৮৫০, ২৮৭০, ২৮৭১, ২৮৭২, ২৮৮২, ২৮৮৩, ২৮৮৪, ২৮৯৭, ২৯১৫, ২৯৪৫, ২৯৫৫, ২৯৫৬, ২৯৫৮, ২৯৮১, ২৯৮২। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাতিলকৃত আদেশের বেশিরভাগ সংশ্লিষ্ট উইং বা বিভাগ থেকে প্রস্তাব করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় করা হয়েছে। কিন্তু সরাসরি বিএডিসি’র সংস্থাপন বিভাগ হতে বদলিকৃত বিতর্কিত আদেশগুলো বাতিল করা হয়নি।
