×

আওয়ামী লীগ

দ্য ডিপ্লোম্যাটের নিবন্ধ

শেখ হাসিনাকে যে কারণে ফেরত দেবে না ভারত

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:২৪ পিএম

শেখ হাসিনাকে যে কারণে ফেরত দেবে না ভারত

ছবি : সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে ভারতের কাছে একটি নোট ভার্বাল পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ কর্তৃক শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরই ১৭ নভেম্বর এ অনুরোধ পাঠানো হয়। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনে দমন–পীড়নের সময় প্রায় ১,৪০০ মানুষের মৃত্যুর জন্য তাদের দায়ী করা হয়েছে।

রায় ঘোষণার পর ঢাকার পক্ষ থেকে এমন আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ প্রত্যাশিতই ছিল। রায় প্রকাশের পরপরই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দিল্লিকে দ্রুত শেখ হাসিনা এবং কামালকে দেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানায়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বিদ্যমান প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ভারতের জন্য এই অনুরোধ বিবেচনা করা বাধ্যতামূলক। একই সঙ্গে তারা সতর্ক করে জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিকে আশ্রয় দেওয়া ‘অবন্ধুপূর্ণ আচরণ’ হিসেবে গণ্য হবে এবং ন্যায়বিচারের পথে বাধা সৃষ্টি করবে।

আরো পড়ুন : প্লট দুর্নীতির ৩ মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন এবং সেখান থেকেই বিভিন্ন বিবৃতি ও সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। গত এক বছরে বাংলাদেশ সরকার একাধিকবার প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠালেও ভারত সরাসরি কোনো জবাব দেয়নি। গত বছরের ডিসেম্বরের প্রথম নোট ভার্বাল কেবল গ্রহণের স্বীকারোক্তি পেয়েছিল; দ্বিতীয় অনুরোধেরও কোনো সাড়া আসেনি।

হাসিনার ফাঁসির আদেশ ঘোষণার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুধু জানায় যে তারা “রায় সম্পর্কে অবহিত” এবং বাংলাদেশে শান্তি, গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার পক্ষে কাজ করবে। তবে প্রত্যর্পণ বিষয়ে কোনো অবস্থান জানায়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারত এখনই কোনো বড় সিদ্ধান্তে যেতে চায় না। ভারতীয় গবেষক স্মৃতি এস. পট্টনায়ক মনে করেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে সরকার আছে তা “অস্থায়ী ও সীমিত ম্যান্ডেটের”, তাই দিল্লি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই।

ভারতে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিরোধিতা বর্তমানে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে—মুক্তিযুদ্ধের সময় সহযোগিতা, ১৯৭৫ পরবর্তী আশ্রয় এবং পারস্পরিক নিরাপত্তা সহযোগিতা এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে। ফলে দিল্লির জন্য একজন দীর্ঘদিনের ‘ঘনিষ্ঠ মিত্রকে’ মৃত্যুদণ্ডের মুখে ফেরত পাঠানো রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর।

২০১৩ সালের প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকলেও ‘রাজনৈতিক অপরাধ’ ধারার কারণে ভারত প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করতে পারে। যদিও খুনের মতো অপরাধ এ ধারায় পড়ে না, তবু শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ কঠিন হতে পারে। পাশাপাশি ভারত বিচার প্রক্রিয়ার ন্যায্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে পারে। এমনকি ভারত সম্মত হলেও পূর্ণ প্রত্যর্পণ শুনানি হবে ভারতীয় আদালতে, যেখানে শেখ হাসিনা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন।

বাংলাদেশে ভারতের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাগত স্বার্থ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় দিল্লি ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সতর্ক কৌশল অনুসরণ করছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতকে “ধীরে ও নীরবে” সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখে এগোতে হবে। তবে নির্বাচন ঘনিয়ে এলে ভারতবিরোধী বক্তব্য রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো জটিল করতে পারে।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আবারও ভূমিকম্প

আবারও ভূমিকম্প

চীনের সঙ্গে উত্তেজনা না বাড়াতে জাপানকে পরামর্শ দিলেন ট্রাম্প

চীনের সঙ্গে উত্তেজনা না বাড়াতে জাপানকে পরামর্শ দিলেন ট্রাম্প

কড়াইল বস্তির বাতাসে দীর্ঘশ্বাস

কড়াইল বস্তির বাতাসে দীর্ঘশ্বাস

শৈশব হারায়, নিরাপত্তা বিপন্ন

বাল্যবিয়ে শৈশব হারায়, নিরাপত্তা বিপন্ন

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App