ইরানের পার্লামেন্টে হরমুজ প্রণালি বন্ধের অনুমোদন

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ০৯:৫২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরানের পার্লামেন্ট কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছে। রোববার (২২ জুন) ইরানের জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা ইসমাইল কাওসারি বলেছেন, মার্কিন আগ্রাসন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতার প্রতিক্রিয়ায় মজলিস (পার্লামেন্ট) বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বাণিজ্যের প্রধান রুটটি বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত সংসদ কমিটির সদস্য কাওসারি বলেন, 'পার্লামেন্ট এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে, হরমুজ প্রণালী বন্ধ করা উচিত, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সুপ্রিম জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের হাতে।' পারস্য উপসাগরের মুখে অবস্থিত হরমুজ প্রণালী বিশ্ব বাণিজ্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলোর মধ্যে একটি। বিশ্বের প্রায় ২০ শতাংশ তেল এই প্রণালী দিয়ে যাতায়াত করে। এটি বিশ্বব্যাপী জ্বালানি খাতের জন্য এটিকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।
এই সরু প্রণালী দিয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসও (এলএনজি) পরিবহন করা হয়, বিশেষ করে কাতার থেকে। হরমুজ প্রণালীই একমাত্র সমুদ্রপথ, যা পারস্য উপসাগরকে উন্মুক্ত সমুদ্রের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এটি ইরান, সৌদি আরব, ইরাক, কুয়েত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো প্রধান তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত।বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছেন, প্রণালীর যে কোনো ব্যাঘাত বা বন্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম তাৎক্ষণিকভাবে এবং বড় ধরনের বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই সঙ্গে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি নিরাপত্তা ব্যাহত হতে পারে।
ইরানের প্রেস টিভি জানিয়েছে, রোববার ভোরে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে মার্কিন আগ্রাসন শুরু করার আগে বিশেষজ্ঞরা ইরানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলমান যুদ্ধ সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করেছিলেন। গত সপ্তাহে প্রেস টিভির সঙ্গে কথা বলার সময় কৌশলগত বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, সরাসরি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য ব্যয়বহুল হবে, বিশেষ করে যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, বিশ্বের বেশিরভাগ বহুজাতিক কর্পোরেশন কয়েক দিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির সরবরাহ শেষ হয়ে যাবে। কিছু পূর্বাভাস অনুসারে, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে প্রথম সপ্তাহেই তেলের দাম ৮০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ বিকল্প রুটগুলোতে প্রচুর খরচ হবে।