৪ জেলায় ২২ মাসে নদীতে মিলেছে ৭৩ মরদেহ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৩ এএম

ছবি : সংগৃহীত
খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চার জেলায় নদীতে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। গত ২২ মাসে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন নদ-নদী থেকে উদ্ধার হয়েছে ৭৩টিরও বেশি মরদেহ, যার এক-তৃতীয়াংশের পরিচয় অজানা।
নৌপুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া অধিকাংশ মরদেহই স্থলভাগে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
নৌপুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২৪ সালে ৩৪টি মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল। চলতি বছর অক্টোবর পর্যন্ত ৩৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুধু খুলনা জেলায় গত কয়েক সপ্তাহেই উদ্ধার হয়েছে তিনটি মরদেহ। ১৭ অক্টোবর দাকোপের বাজুয়ার চুনকুড়ি নদী থেকে আশিষ সরকারের বস্তাবন্দি মরদেহ। একই দিনে পাইকগাছার শিবসা নদীর চর থেকে ইকরাম হোসেনের মরদেহ। আর ১৬ অক্টোবর জিরবুনিয়া খাল থেকে এক অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ।
খুলনা নৌপুলিশ সুপার ড. মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলো তিন ধরনের, দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা ও হত্যা। এর মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। তিনি বলেন, স্থলভাগে হত্যার পর মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে, যাতে প্রমাণ মুছে ফেলা যায়। নবজাতক থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক, দুই ধরনের মরদেহই পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের ফোকাস নদীকেন্দ্রিক এলাকায় বেশি। কিন্তু স্থলভাগের হত্যাকাণ্ডে কোনো চক্র জড়িত কিনা, তা জানতে সময় লাগে। পর্যাপ্ত জনবল থাকলে তদন্ত আরো দ্রুত সম্পন্ন করা যেত।
আরো পড়ুন : জবি ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হত্যার নেপথ্যে যে কারণ
তিনি আরো বলেন, অর্ধগলিত মরদেহের ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেলানো কঠিন হওয়ায় অনেকের পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তবে যাদের নিখোঁজ জিডি মেলে, তাদের পরিচয় শনাক্তে অগ্রগতি সম্ভব হচ্ছে।
মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা খুলনার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, খুলনাসহ আশপাশের জেলায় প্রায় প্রতিদিনই নদীতে মরদেহ ভেসে উঠছে। ৫ আগস্টের পর পুলিশের নজরদারি ও র্যাবের ভূমিকা অনেকটা কমেছে। এই সুযোগে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, যত দ্রুত বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে, তত দ্রুত অপরাধীরা ভয় পাবে। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে অজ্ঞাত মরদেহ শনাক্ত করা গেলে অপরাধীদের খুঁজে বের করা সহজ হতো।
নৌপুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে নদী থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। তবে লোকবল সংকট ও স্থলভাগে তদন্তে বিলম্বের কারণে অনেক মামলা এখনও চলমান।