প্লট দুর্নীতির ৩ মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৬ পিএম
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : সংগৃহীত
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকার বিশেষ জজ-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরাও মোতায়েন রয়েছে।
এর আগে গত রোববার মামলার একমাত্র গ্রেপ্তারকৃত আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এই দিন ধার্য করেন। পলাতক অন্য আসামিরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ পাননি এবং আত্মপক্ষেও নিজেদের নির্দোষ দাবি করতে পারেননি।
আরো পড়ুন : শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নেপথ্যে যে বাধা
দুদক প্রসিকিউটর খান মো. মাইনুল হাসান (লিপন) জানান, তারা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রত্যাশা করেছিলেন। তবে খুরশীদ আলমের আইনজীবী শাহীনুর রহমান দাবি করেন, তার মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ দুদক প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি।
আদালত সূত্র জানায়, প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে এ বছর জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব মামলায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, তার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
শেখ পরিবারের বাইরে আসামির তালিকায় রয়েছেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) নাসির উদ্দীন, সাবেক মেজর সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
গত ৩১ জুলাই বিশেষ জজ আদালত-৫ তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে। বাকি তিন মামলার অভিযোগ গঠন হয় বিশেষ জজ আদালত-৪ এ।
১৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনা–পরিবারসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ তদন্ত কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া অতিরিক্ত চারজনসহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
১২ জানুয়ারি আরেক মামলায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮।
এছাড়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি দাখিল হওয়া মামলার তদন্ত শেষে মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় থাকার সময় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা পূর্বাচলের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠার প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দ নেন। অভিযোগ অনুযায়ী তারা অযোগ্য হলেও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এসব প্লট গ্রহণ করেন।
