ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার অংশগ্রহণের সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি মো. মনজুর আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে মাহমুদুর রহমান মান্নার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান।

আরো পড়ুন : নির্বাচন যেন পেছানো না হয়: ইসিকে এনসিপি

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার জন্য নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না রিট করেছিলেন। আদালত সেই রিট খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

অন্যদিকে মান্নার আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে তারা আপিল করবেন।

এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান আফাকু কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের কাছে খেলাপি অর্থ আদায়ে ‘কল ব্যাক নোটিশ’ জারি করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের বগুড়া বড়গোলা শাখা। নোটিশে প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

মান্না ও তার দুই অংশীদারের ঠিকানায় পাঠানো নোটিশে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়।

নোটিশটি ইসলামী ব্যাংক বগুড়া বড়গোলা শাখার প্রধান তৌহিদ রেজার স্বাক্ষরে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান মান্না এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ঠিকানায় পাঠানো হয়।

ব্যাংক সূত্র জানায়, আফাকু কোল্ড স্টোরেজে মাহমুদুর রহমান মান্নার ৫০ শতাংশ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নাজমুল কাদির শাজাহান চৌধুরীর ২৫ শতাংশ এবং তার স্ত্রী ও পরিচালক ইসমত আরা লাইজুর ২৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

গত ৩ ডিসেম্বর পাঠানো নোটিশে বলা হয়, বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক বাজার এলাকায় অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটির কাছে খেলাপি বিনিয়োগ বাবদ মোট ৩৮ কোটি ৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বকেয়া রয়েছে। ব্যাংকটি ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ২২ কোটি টাকা বিনিয়োগ অনুমোদন দেয়।

নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়, প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত মুনাফা, চার্জ ও জরিমানা পরিশোধ না করায় বকেয়ার পরিমাণ বেড়েছে। লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধে কোনো অগ্রগতি না থাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা হিসেবে এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক বগুড়া বড়গোলা শাখার প্রধান তৌহিদ রেজা বলেন, মাহমুদুর রহমান মান্না ঋণখেলাপি হওয়ার পরও পরিশোধে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেননি। চুক্তি অনুযায়ী ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংক বাধ্য হয়ে নোটিশ দিয়েছে।