ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যে ইসরায়েলিদের দেশ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী। রোববার (১৫ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানায়, ভবিষ্যতে ইসরায়েল বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র রেজা সায়্যাদ।

রেজা সায়্যাদ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, দখলদার অঞ্চলগুলো ছেড়ে যান, কারণ ভবিষ্যতে সেগুলো আর বসবাসযোগ্য থাকবে না।

তিনি বলেন, ভূগর্ভে আশ্রয় নিয়ে নিরাপত্তা খোঁজার চেষ্টা করবেন না—কারণ তা কোনো নিরাপত্তা দিতে পারবে না। আমাদের কাছে অধিকৃত অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি ডেটা ব্যাংক রয়েছে এবং আমরা আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যে নৃশংস শাসকগোষ্ঠীকে আপনাদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে দেবেন না।

তিনি আরো বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকার কাছাকাছি থাকবেন না বা ভ্রমণ করবেন না, এ বিষয়ে আমরা বিশেষভাবে সতর্ক করছি।

এদিকে, ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি)-এর সিনিয়র কমান্ডার ও ইরানের এক্সপিডিয়েন্সি কাউন্সিলের সদস্য মোহসেন রেজায়ি বলেছেন, আমরা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারি, যেখানে বড় ধরনের কোনো পদক্ষেপ নিতে হবে। তাদের এ পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রেজায়ি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিচক্ষণ মানুষদের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে তাদের দেশগুলো এই যুদ্ধে জড়ানো থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে পারে।  না হলে, আমরা চুপচাপ বসে তাদের সম্পৃক্ততা দেখব না।

গত শুক্রবার একাধিক ইরানি সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় আকস্মিক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। উসকানিমূলক এ হামলার জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা শুরু করে। এই হামলা-পাল্টা হামলা এখনো অব্যাহত রয়েছে, ফলে পুরো অঞ্চলে যুদ্ধের সম্ভাবনা আরো বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।

আরো পড়ুন : নেতানিয়াহুর বাড়ি লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তি অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। এবং সেই লক্ষ্যে আলোচনা ও যোগাযোগ চলছে বলেও জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

এদিকে ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলো উত্তর উপকূলীয় বন্দর শহর হাইফার ‘একটি বসতিতে’ ইরানি হামলার খবর পেয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি, তবে সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। হাইফা শহরে চালানো ইরানি হামলার ফুটেজ এবং ছবিতে দেখা গেছে, শহরটির রাতের আকাশ ঘন ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে। ইসরায়েলি পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমরা জনসাধারণকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে দূরে থাকতে এবং ঘটনাস্থলে পুলিশের নির্দেশাবলী মেনে চলতে অনুরোধ করছি। তবে গোলার আঘাতে আহত দু’জনকে হাসপাতালে নেয়ার খবর দিয়েছে ইসরাইলের অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম। 

এর আগে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন দিয়ে স্থানীয় সময় রোববার (১৫ জুন) রাতে ইসরায়েলের তেল আবিব, হাইফা এবং অন্যান্য শহরে আক্রমণ শুরু করে ইরান। ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।