×

জাতীয়

এদের ঘাড়ে চাপছে ’৭১ এ যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তারা: গয়েশ্বর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম

এদের ঘাড়ে চাপছে ’৭১ এ যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তারা: গয়েশ্বর

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমরাও সংস্কার চাই। এ জন্য আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। কিন্তু এই যে তারা (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি) যেটা দিতে চায়, সেটা আমাদের না দিলেও আমরা তা কোনো না কোনোভাবে পেয়েছি। সেখানে ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এদের ঘাড়ে চাপছে ’৭১ এ যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তারা। আকারে ইঙ্গিতে তারা বলতে চায়, ৫ আগস্ট (২০২৪ সাল) দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাহলে ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গরু-ছাগল রক্ত দিয়েছে, নাকি মানুষ রক্ত দিয়েছে? মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের ছবক শুনতে  রাজি নয় জাতি। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও ৭৫ এর ৭ নভেম্বরের পরাজিত শক্তি মিলে যারা জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন, তাদের রুখে দেয়ার ক্ষমতা এদেশের জনগণ রাখে। 

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা বিএনপির উদ্যোগে কর্মিসভা ও সদস্য ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়বলেন, আমরা অনেককেই ক্ষমা করতে পারি, ভুলে যেতে পারি। ক্ষমা মহত্তের লক্ষণ। কিন্তু ক্ষমা করার পর একই কাজ যদি আবার করেন, তাহলে ভুলে গেলে চলবে না। মুক্তিযুদ্ধ ও ৭ নভেম্বরের পরাজিত শক্তি মিলে যারা জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন, তাদের রুখে দেয়ার ক্ষমতা এদেশের জনগণ রাখে। সেই নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্য নেতৃত্বও আছে। জিয়াউর রহমান হারিয়ে গেছেন, কিন্তু খালেদা জিয়া সেই জায়গা থেকে শুরু করেছেন। সেখান থেকেও নেতৃত্বে চলে এসেছেন তাদের যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমান। যুক্তরাজ্য থেকে দল ও দেশবাসীকে সংগঠিত করে বিজয় নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু এর ফলাফল যতক্ষণ পর্যন্ত গোলায় না ওঠে, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি সক্রিয় আছেন, আমরাও সক্রিয় আছি।           

তিনি বলেন, সবচেয়ে সৌভাগ্যের বিষয় আমি মুক্তিযুদ্ধ করতে পেরেছি। বাংলাদেশে স্বাধীনতার যুদ্ধ তো বারবার হবে না, আমরা সেই যুদ্ধটা করতে পেরেছি। সেই ডাকটাই দিয়েছিল রাজনীতির বাইরের একজন মেজর, তার নাম জিয়াউর রহমান। যার নাম মানুষের অন্তরে অন্তরে। যে আশা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি, সেই আশা পূরণ হয়নি বলেই তো আওয়ামী লীগের এমন পরিণতি হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মর্মান্তিক ঘটনার মধ্যদিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হলেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই কিন্তু সরকার গঠন করা হয়েছিল, যা নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোশতাক।  

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সংঘটিত হওয়ার মধ্যদিয়ে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসলেন। বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করলেন তিনি। ৯০ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৭৫ সালের সিপাহী-জনতার বিপ্লব এবং ৯০-তে গণঅভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচারের পতন— এসব কি ইতিহাসের অংশ নয়? এসব কি ইতিহাসের পাতা থেকে বের করে দেবেন? স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্রজনতা ছিল। তারা কি রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসেছিল?

গত ১৬ বছর যাবৎ বিএনপি আন্দোলন করছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ছাত্রদের কোটাবিরোধী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮ দফার মধ্যে সরকার পতনের দাবি ছিল না। তারা যখন এই আন্দোলনে নামছে আমরা পরদিন তাতে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছি, আমি একজন সাক্ষী। ছাত্ররা আন্দোলনে নামার পরপরই আমি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে মোবাইলে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠালাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি আমার মোবাইলে ফোনে কল করলেন। বললেন, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে সবাইকে ডেকে বসি। বিকেল ৪টার দিকে কথা, ৬টায় দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকলেন তিনি। সেই বৈঠক থেকে ছাত্রদের আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানানো হলো। এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সক্রিয় হয়ে উঠলেন। টেলিফোনে তিনি সবার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করলেন। আমাকে বললেন, শুধু নৈতিক সমর্থন যথেষ্ট না, সবাইকে সক্রিয় করতে হবে। আমি বললাম, অবশ্যই সক্রিয় করতে হবে। তবে দলীয় ব্যানার ছাড়া আমরা সবাই এই আন্দোলনে অংশ নেবো। আমাদের ছাত্র-যুবক নেতাকর্মীরা মাঠে নেমে পড়লো। হাসিনা কিন্তু বার বার বলছে, এটা বিএনপির ষড়যন্ত্র।

তিনি বলেন, এরপর আমরা সর্বাত্মক সমর্থন জানালাম। আমরা বিএনপির পোশাক ছেড়ে হয়ে গেলাম ছাত্র-জনতা। এই আন্দোলনে শুধুমাত্র ছাত্রের বাবা-ই নামেনি, দেশের সব মানুষ নেমেছিল। এদেরকে কে নামিয়েছিল, এই বিএনপি-ই নামিয়েছিল।

গয়েশ্বর রায় আরো বলেন, আমরা ছাত্রদের অভিনন্দন জানাই। এখনও অভিনন্দন জানাই। তবে ১৫ দিনের পুঁজি দিয়ে রাস্তায় বেশিদিন হাটা যায় না। ১৬ বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি। প্রত্যেকটা রক্তের মূল্য আছে- যে সর্বশেষ রক্ত দিয়েছে তারও আছে, যে সবার আগে দিয়েছে তারও আছে।

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আগামী জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হবে: ডিএমপি কমিশনার

আগামী জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হবে: ডিএমপি কমিশনার

পটেটো চিপস খেয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনছেন না তো!

পটেটো চিপস খেয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনছেন না তো!

মেঘনায় উদ্ধার মরদেহটি সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের, জানালেন স্বজনরা

মেঘনায় উদ্ধার মরদেহটি সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের, জানালেন স্বজনরা

জুলাই সনদ পর্যালোচনা করে মতামত দিলো বিএনপি, এনসিপিসহ ২৩ দল

জুলাই সনদ পর্যালোচনা করে মতামত দিলো বিএনপি, এনসিপিসহ ২৩ দল

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App